রাজধানীর গুলিস্তানে বিস্ফোরণের আজ তৃতীয় দিন। এখনো কাটেনি উৎকন্ঠা। স্বজানহারানোরা শেষ স্মৃতিটুকু খুঁজে ফিরিছেন আর আশ্রুতে ভিজছে নয়ন। বাতাসে কেবলই পোড়া গন্ধ।
ক্ষতিগ্রস্ত সাততলা ভবনটিতে তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান শুরু করেছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। তবে ভবনের নিচে পানি জমে থাকায় উদ্ধার অভিযান কিছুটা বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে তৃতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। তবে বেসমেন্টে পুরোপুরি কাজ করতে পারছেন না উদ্ধারে অংশ নেয়া বিভিন্ন দফতরের সদস্যরা। এরই মধ্যে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করায় যারা ভেতরে ঢুকেছেন, তারাও কাজ করছেন ভয় নিয়ে।
ভবনটির ভেতরে ঢোকা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জানিয়েছেন, ওই ভবনের বেসমেন্টে অনেক পানি জমে আছে, এতে উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এখন পানি সরানোর কাজ চলছে।
এদিকে এখনও ভেতরে কেউ আটকে পড়ে আছে কি-না, তা খোঁজ করা হচ্ছে। দুদিন পেরিয়ে যাওয়ায় ভেতরে কাউকে জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবুও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে উল্লেখ করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) জানিয়েছে, এরই মধ্যে ভবনটি ব্যবহারের অনুপোযোগী ঘোষণা করা হয়েছে। এর ২৪টি পিলারের মধ্যে ৯টিই ক্ষতিগ্রস্ত। ভবন ব্যবহার অথবা অপসারণের জন্য হলেও কিছুদিনের জন্য সংস্কার করতে হবে। এখন পরিষ্কারের কাজ চলছে। পাশাপশি ভেতরে কেউ আছে কি-না, তা দেখা হচ্ছে।
ভেতরে কোনো মরদেহ নেই - এটা পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলবে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে ভয়াবহ এ বিস্ফোরণ ঘটে। খবর পেয়ে প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিস। পরে সেখানে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, সিটিটিসি, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়।
বিস্ফোরণের পরই উদ্ধারকাজে অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট। বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থল থেকে আহতদের হাসপাতালে নেয়ার কাজ করে। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ও স্থানীয়রাও উদ্ধার কাজে অংশ নেন। বিস্ফোরণে বুধবার রাত পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০।
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বংশাল থানা পুলিশ। আর ঘটনাটি তদন্ত করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ফায়ার সার্ভিস ও ডিএমপির সিটিটিসি।
এবি