তীব্র যানজটে হেঁটে যেতেও নেই স্বস্তি

আবু ছালেহ আতিফ প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৩, ০৮:৫৭ পিএম

ঢাকা শহরের যানজট বেড়েই চলেছে দিনে দিনে। আর এ যানজটের কারণে ভুক্তভোগী হচ্ছে কর্মমুখী মানুষ। যাতায়াতের জন্য তারা সাধারণত পাবলিক বাস ব্যবহার করে। কিন্তু বর্তমানে যানজটের অবস্থা এমন যে দশ মিনিটের রাস্তা যেতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১ ঘন্টার বেশি লেগে যায়। কিন্তু সেই হেটে গন্তব্যে পৌছানোটাও মাঝে মাঝে দুরূহ হয়ে পরে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে।বিরক্তিকর অবস্থায় পরতে হচ্ছে পথচারীদের।

বুধবার (১৫ মার্চ) বিকেলে  রাজধানীর জজ কোর্ট, রায়সাহেব বাজার, গুলিস্তান বাবু বাজার এরিয়া ঘুরে এ দৃশ্য দেখা যায়।

প্রচন্ড গরমে কষ্ট হলেও গাদাগাদি করে বাসে ওঠে বিভিন্ন পেশার নানান মানুষ। কিন্তু যানজটের অবস্থা এমন হয় যে,তারা বাস থেকে নেমে হেটে-হেটে গন্তব্যে পৌঁছায়।এতে করেও দেখা দেয় হাটার জ্যাম।

তাতীবাজার বাজার থেকে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে হেটে-হেটে বাসার উদ্দেশ্য যাচ্ছে আকবর আলী (৫৫)। তিনি বলেন, জজ কোর্টে আসছিলাম মামলার হাজিরা দিতে।এখন বাসায় যাচ্ছি হেটে সেই ফার্মগেট তেজতুরী বাজার।

বাস অথবা অন্য যানবাহনে কেনো উঠছেনা জিগ্যেস করলে আকবর আলী আমার সংবাদকে বলেন, আসলে যেই পরিমান যানজট তাতে বসে থাকা খুব কষ্ট এবং ঘন্টায় ঘন্টায় বসে থাকতে হবে।দেখা যাবে বাসে যেতে লাগবে ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট। কিন্তু আমি সেটা হেটেই চলে যাবো এই সময়ের মধ্যে।

তিনি বলেন, সকালে যখন আসছি তখনো অনেকটা হেটেই আসছি,কিছু করার নেই।তবে হাটার ক্ষেত্রেও রাস্তা ফাঁকা না থাকায় সেটাও কষ্টকর বলছেন এ পথচারী।

গুলিস্তান আলু বাজার থেকে মহাখালীর উদ্দেশ্য দ্রুত গতিতে হেটে যাচ্ছে বরিশাল থেকে আসা মানিক মিয়া। এত গাড়ি থাকতে হেটে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে এ পথচারী বলেন, জ্যামে লাগবে প্রায় দুই ঘন্টা বা তারও বেশি। তার চেয়ে হাটতে থাকি দেখি ;যদি রাস্তা ফাঁকা হয় তাহলে বাসে উঠবো।

ঢাকার এ যানজট নিরসনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের সরকারি উদ্যোগ দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে আছে রাস্তা সংস্কার, ফুটপাত নির্মাণ, নতুন রাস্তা নির্মাণ, রোড ডিভাইডার স্থাপন, ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস, ফ্লাইওভার নির্মাণ, রাস্তা একমুখী করা ইত্যাদি। এরপরও যানজট রয়েই গেছে।

নাম উল্লেখ করতে না চাওয়া  সচেতন কিছু শ্রেনীর মানুষ বলছেন এসব ব্যাবস্থাপনা সঠিক তদারকির অভাব রয়েছে। যদি ও বিশেষজ্ঞরা যানজট নিরসনের আশু ব্যবস্থা হিসেবে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের কথা বলছেন। যেমন, ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, রাস্তার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, বাইপাস নির্মাণ, প্রয়োজন হলে আরও রেললাইন এবং সম্ভব হলে পাতাল রেলের ব্যবস্থা করা। এবং প্রধান সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ করার পরিকল্পনা নিতে হবে ।

কিন্তু  দেখা গেছে,বলা শুধু বলাই রয়ে যায়। এসব অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, বাইলেন ইত্যাদি তৈরি করে সেসবের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

অন্যদিকে, যানজটের কারনে রয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি। এ সম্পর্কে  ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনের একটি  গবেষণায় দেখা গেছে,যানজটে পড়া যাত্রীর মানসিক ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যানজটের কারণে টেনশন বাড়ে, বাড়ে হৃদস্পন্দন আর রক্তচাপ, ফলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেড়ে যায় তিন গুণ। এছাড়া যানজটের ফলে নির্গত অতিরিক্ত কালো ধোঁয়া পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

আরএস