পথের ক্লান্তি ভুলে স্নেহভরা কোলে তব/মাগো, বলো কবে শীতল হবো।/কত দূর আর কত দূর বল মা...। গানটি হেমন্ত মুখোপাধ্যায় গাইলেও কথাগুলো সবার জন্যই মর্মস্পর্শি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন-‘হেরিলে মায়ের মুখ/দূরে যায় সব দুখ।’
বিশ্ব মা দিবস আজ। প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববারটি মা দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়।
বর্তমানে প্রচলিত মা দিবসের সূচনা ১৯০৮ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার এক স্কুলশিক্ষিকা অ্যানা জারভিস সেখানকার পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা দেখে মর্মাহত হয়ে মায়ের জন্য বিশেষ দিন পালনের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করার কথা ভাবলেন। ভাবনা বাস্তবায়নের আগে ১৯০৫ সালের ৯ মে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর মেয়ে অ্যানা এম জারভিস মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণের উদ্দেশ্যে কাজ শুরু করেন। বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে ১৯০৮ সালে তার মা ফিলাডেলফিয়ার যে গির্জায় উপাসনা করতেন, সেখানে সব মাকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মা দিবসের সূচনা করেন। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আনুষ্ঠানিকভাবে মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মায়েদের জন্য উত্সর্গ করে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়।
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আজ নানা আয়োজনে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ভরে উঠেছে মাকে নিয়ে আবেগভরা নানা ছবি ও লেখায়।
সন্তানের লালনপালনসহ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলায় মায়ের অবদান অনস্বীকার্য। হয়তো এজন্য আজো মানুষের মুখে মুখে ফেরে গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীরের সে গান- এক ধার দুধের দাম কাটিয়া গায়ের চাম,/পাপোশ বানাইলেও ঋণের শোধ হবে না/এমন দরদী ভবে কেউ হবে না আমার মা গো...। মাকে নিয়ে এমন লেখা হয়েছে শত সহস্র কবিতা, গান।
মা দিবসে যদিও সুনির্দিষ্ট কোনো আনুষ্ঠানিকতা দেখা যায় না। তবু অনেকে ঘরোয়াভাবে হয়তো দিনটি উদযাপন করবেন। ফুল দিয়ে মাকে বরণ করবেন। মায়ের মুখের হাসি দেখতে কোনো কাঙ্খিত উপহার হাতে তুলে দেবেন। মাকে ঘিরে ধরে কেক কাটবেন। কেকের গায়ে লেখা থাকবে ‘হ্যাপি মাদারস ডে।’
আরএস