কৃষিমন্ত্রী

নিষেধাজ্ঞা হুঁশিয়ারি সবার জন্য সতর্কবার্তা

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৩, ০৩:১১ পিএম

সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সেই বিষয়ে সরকার চিন্তিত না বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘এটি সবার জন্য সতর্কবার্তা।’

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আব্দুর রাজ্জাক এ কথা বলেন। এর আগে মন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাক্ষাৎ করেন।

বুধবার (২৪ মে) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ঘোষিত এই ভিসানীতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই বলবে, ‘আমি উপযুক্ত ব্যক্তি নই এ বিষয়ে কথা বলার। ইতোমধ্যে সরকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লিখিত জবাব দিয়েছে। সেটিই আমার বক্তব্য। সেখানে আমরা বলেছি- অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে আরেকটি নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ভোট দিয়ে ঠিক করবে, আগামী দিনে কারা সরকার গঠন করবে।’

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এটা (ভিসা নিষেধাজ্ঞা) সরকারি ও বিরোধী দল, সিভিল সোসাইটি সবার জন্য প্রযোজ্য। যারাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করবে তাদের বিরুদ্ধে ভিসার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। আমরাও বারবার বলেছি, প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, আমরা যেকোনো মূল্যে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ‍সুন্দর নির্বাচন করবো।’

‘আমি মনে করি এটা সবার জন্য সতর্কবার্তা। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ছাড়া এর বাইরে কিছু করলে ‍যুক্তরাষ্ট্র সেটা অ্যাপ্রিশিয়েট করবে না।’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি মনে করি এ স্যাংশনসটা...আমাদের অনেক অশুভশক্তি রয়েছে, অসাংবিধানিক গোষ্ঠী রয়েছে, ১৯৭৫ সালে তারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে। বারবার এ অসাংবিধানিক শক্তি ক্ষমতায় এসে, যেটা আপনারা দেখছেন পাকিস্তানে ঘটছে। এমন ধারা বাংলাদেশেও আসতে পারে।’

‘আমরা সরকার বা আওয়ামী লীগ এটা (নিষেধাজ্ঞা) নিয়ে চিন্তিত না। আমরা আমাদের বিবেক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছি। কাজেই এটা নিয়ে আমাদের কোনো ভয় নেই। সুনির্দিষ্ট কারও ওপর তারা নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। কেউ করলে তার ওপর দেবে। সেক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান খুবই সুস্পষ্ট।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে যেটা সঠিক নয়, আমরা সেটা করবো না। এমন কিছু করবো না যেটার মাধ্যমে আমাদের কেউ ভিসা থেকে বঞ্চিত হয়।’

সরকার কোনো চাপ অনুভব করছেন কি না- জানতে চাইলে বলেন, ‘আমরা কোনো চাপ অনুভব করছি না। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আমরা অতীতে দেখিনি। এটি বিরোধীদের জন্য প্রযোজ্য। যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যা করে- তারাও তো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। তারাও তো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার অপরাধ থেকে মুক্ত নয়।’

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি নির্বাচনে না আসে সেই দায়িত্ব তাদের। শেষ দিন পর্যন্ত চেষ্টা করবো, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন করার জন্য। সেজন্য সরকারের কোনো কার্পণ্য থাকবে না, কোনো আন্তরিকতার অভাব দেখাবে না। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির বিষয়ে এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তার পাশে রয়েছে বলে মনে করে সরকার।

বিবৃতিতে বলা হয়, নিজেদের ভোট ও গণতান্ত্রিক অধিকারের ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণ অনেক বেশি সচেতন। ভোট কারচুপির মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকার কোনো নজির নেই।

আরএস