দ্বাদশ নির্বাচনে প্রতিদান দিতে প্রস্তুত জনগণ

কসবা-আখাউড়ার উন্নয়নের কারিগর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

নূর মোহাম্মদ মিঠু প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২৩, ০৯:৪৫ পিএম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। এরই মধ্যে এলাকামুখী হতে শুরু করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্যরা। চান দ্বাদশ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন। যদিও তথ্য রয়েছে, ফের নমিনেশন চাইবেন— এমন অসংখ্য সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধেই বিরূপ মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন খোদ নিজ দলীয় নেতাকর্মীরাই। ইতোমধ্যে একাধিক আসনে গ্রুপিং কিংবা হানাহানির ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। 

যেসব আসনে এমন ঘটনা ঘটছে, সেখানকার সংসদ সদস্যদের নেতৃত্বের গুণাবলিও এখন রাজনৈতিক বিভিন্ন মহলে প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু এমন বেশ কজন সংসদ সদস্য রয়েছেন, যারা নিজ আসনে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষকে বুকে টেনে নিয়ে রাজনৈতিক ভারসাম্যের দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছেন। তাদের অন্যতম একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা-আখাউড়া আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। যিনি কসবা-আখাউড়াকে অনুন্নয়নের বেড়াজাল থেকে করেছেন মুক্ত। দুই উপজেলার বাসিন্দারা অকপটে এক কথায় বলছেন, মরা গাঙে উন্নয়নের জোয়ার এনে দিয়েছেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে এর প্রতিদান দিতেও প্রস্তুত দুই উপজেলার বাসিন্দারা।

আনিসুল হককে নিয়ে কসবা-আখাউড়ার বাসিন্দাদের ভাষ্য, নেতা যদি প্রকৃত কর্মী বা জনগণকে চিনতে না পারেন, জনগণের মনের ভাষা বুঝতে না পারেন, জনগণের বিপদে-সংকটে সাধ্যমতো পাশে দাঁড়াতে না পারেন— তবে তিনি নেতা নন, তিনি অভিনেতা। আমাদের সৌভাগ্য আমরা এমনই একজন নেতা পেয়েছি, যিনি দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও বিরোধী মতাদর্শের রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসা কুড়িয়েছেন। দল-মত নির্বিশেষে নিজেকে পরিণত করেছেন আস্থা-ভরসার প্রতীকে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দুই উপজেলার সাধারণ মানুষের অভিভাবক হিসেবে। তিনি তিতাসপাড়ের বীর, কসবা-আখাউড়াবাসীর গর্ব-অহংকার। কসবা-আখাউড়াবাসীর উন্নয়নের রূপকার। তার হাত ধরেই কসবা ও আখাউড়ায় অভাবনীয় উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, যা আগের কোনো সংসদ সদস্য করতে পারেননি। 

সাধারণ বাসিন্দারা বলছেন, আনিসুল হকের কাছ থেকে তাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া শতভাগ বিদ্যুতায়ন, শিক্ষিত হাজারো বেকার ছেলেমেয়ের চাকরি। সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ, একাধিক স্কুল-কলেজ জাতীয়করণ। এছাড়াও তার উন্নয়নকাজের মধ্যে অন্যতম একটি হলো কসবার বায়েক ইউনিয়নের নয়নপুরে মা ও শিশু হাসপাতাল। কসবা-আখাউড়া থানায় দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণসহ আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ। কসবা-কুটি সড়ক ছাড়াও অসংখ্য সড়কের উন্নয়ন। শুধু তা-ই নয়, গরিব-মেহনতি মানুষের জন্যও নিবেদিতপ্রাণ আনিসুল হক। এই স্তরের মানুষদের খেদমতে নিজেকে নিয়োজিত রাখায় দুই উপজেলার বাসিন্দারাই এক কথায় বলছেন, মানব ও মানবতার মূর্তপ্রতীকও তিনি।

কসবার বায়েক গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল বারেক মেম্বারের জামাতা মো. আজাদ হোসাইন বলেন, কসবা-আখাউড়ায় সরেজমিন না এলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবেন না যে, তার (আনিসুল হকের) জনপ্রিয়তা কতটা। এমন কোনো উন্নয়নকাজ তিনি বাকি রাখেননি যা পরবর্তীতে অন্য কেউ করার আশ্বাস দিয়ে এ আসনে এমপি নির্বাচিত হওয়ার মানসিকতা পোষণ করবেন। তিনি এমন উন্নয়ন আর সেবা দিয়েছেন যা আমরা আমৃত্যু স্মরণে রাখব। 

আজাদ হোসাইন আরও বলেন, আনিসুল হক স্যার এমন এক পরিবারের সন্তান যাদের পূর্বপুরুষ থেকে শুরু করে প্রত্যেকেই সুশিক্ষায় শিক্ষিত। দেশ স্বাধীনের পর এমন সুশিক্ষিত রাজনৈতিক পরিবার এ অঞ্চলে পাওয়া কঠিন। 

তিনি বলেন, নিঃসন্তান আনিসুল হক স্যার কসবা-আখাউড়ার সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদেরই সন্তানের মতো আগলে রেখেছেন। দল-মত নির্বিশেষে সবার মধ্যে তিনি আন্তরিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যে কারণে বর্তমানে এ আসনে বিএনপির অসংখ্য লোকজনও তার ভক্ত বনে গেছেন। বিরোধী মতের হলেও আজ পর্যন্ত তিনি শিক্ষিত কোনো যুবক-যুব মহিলাকে নিরাশ করেননি। যোগ্যতা অনুযায়ী দিয়েছেন চাকরি। এ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার ২০০ জনেরও বেশি লোককে তিনি চাকরি দিয়েছেন। আমরা কসবাবাসী তার জন্য প্রার্থনা করি, মহান আল্লাহ যেন তাকে দীর্ঘজীবী করেন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার পরিবর্তে আমরা অন্য কাউকে চাই না।

তিনি আরও বলেন, এমন কোনো মানুষ নেই এই এলাকায় যিনি তার বিরুদ্ধে কথা বলবেন। কারণ তার ভালোবাসা কম-বেশি সবাই পেয়েছেন। যদি কেউ তার বিরুদ্ধে বলেও থাকেন, তাহলে ওই ব্যক্তিকে মীরজাফর বলা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। 

কসবার আরেক বাসিন্দা আবু হানিফ বুলবুল বলেন, অতীতে এমপিরা আগে ভোট চেয়ে পরে কাজ করেছেন; আর বর্তমান এমপি আনিসুল হক উন্নয়ন-চাকরি-বিদ্যুৎ দিয়ে ভোট চাওয়ার নজির সৃষ্টি করেছেন। এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং দেশকে বাতিলি শক্তি ও জাতির পিতাকে হত্যার পর সমাজব্যবস্থাকে গ্রাস করার যে মিথ্যা ইতিহাসের প্রচার হচ্ছিল; তার হাত থেকেও জাতিকে রক্ষায় ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলা ও জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি। এছাড়াও বিডিআর বিদ্রোহ ও দুদকের মামলাসহ রাষ্ট্রীয় অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ মামলা পরিচালনা করেছেন। তার পিতা প্রয়াত সিরাজুল ইসলামও ছিলেন দেশবরেণ্য রাজনীতিক ও আইনজীবী এবং স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা। আইনি শিক্ষায় শিক্ষিত ও পিতার আদর্শে আদর্শিত আনিসুল হক আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গের সঙ্গে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়ও নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

এখানেও সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন তিনি। তারই সাফল্যের হাত ধরে গত প্রায় এক দশক ধরে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের পাশাপাশি আইন মন্ত্রণালয়, বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও অভাবনীয় সাফল্য এসেছে বলে বলছেন আইন-সংশ্লিষ্টরা। যেখানে অতীতে বিভিন্ন সরকারের সময় বহুকাল ধরেই ব্রিটিশ আমলের পুরোনো ধাঁচেই চলে আসছিল বিচারব্যবস্থা। তবে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের হাত ধরে এখন ঢেলে সাজানো হয়েছে গোটা আইন ও বিচার বিভাগকে। ইতোমধ্যে প্রযুক্তির ছোঁয়াও লেগেছে বিচার বিভাগে। সব মিলিয়ে তিনি জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সাধারণ মানুষের হূদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। 

আরএস