যুব উন্নয়ন সংসদ ঢাকার উদ্যোগে ১২ আগস্ট জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি পূর্ব সমাবেশে বিশিষ্ট জনেরা বলেন, মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি আর ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপমুক্ত দেশ গড়তে হবে। জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সোনার বাংলাদেশ গড়তে যুব সমাজকে দক্ষ করে গড়ে তোলার বিকল্প নেই। একইসাথে দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি নৈতিক অবক্ষয় রোধ করতে না পারলে যত উন্নয়ন করা হোক না কেন, তা দিয়ে সুস্থ ধারার জাতি বিনির্মাণ কখনোই সম্ভব নয়। মাদক ও সন্ত্রাসের কারণে দেশের যুবকেরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে না পারলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব না বলেও জানান বক্তারা।
“বাংলাদেশের নিরাপদ সার্বভৌমত্ব: প্রয়োজন সৎ, যোগ্য ও দক্ষ যুব নেতৃত্ব” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষ্যে যুব উন্নয়ন সংসদ ঢাকার উদ্যোগে শনিবার (১২ আগস্ট) সকালে র্যালি পূর্ব সমাবেশে বক্তারা এইসব কথা বলেন।
বর্ণাঢ্য র্যালীটি রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে পল্টন হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিজয়নগর মোড়ে শেষ হয়। বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও সমাজ সচেতন ব্যক্তিত্ব ডাক্তার মোয়াজ্জেন হোসেনের সভাপতিত্বে র্যালি পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী।
আরও বক্তব্য প্রদান করেন পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও ডিইউজের সাবেক সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ঢাকা বারের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান। যুবনেতা আব্দুস সাত্তার সুমনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন যুবনেতা অ্যাডভোকেট মাহফুজুল হক, রেজাউল করিম, সোহেল রানা মিঠু প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, যুবকরাই দেশ স্বাধীন করেছে। বিভিন্ন মাদক দিয়ে সরকার দেশের যুবকদের ধ্বংস করে দিচ্ছে। বর্তমান সরকার গণতন্ত্র হত্যাকারী। আজ দেশে ন্যায় বিচার ভূলুণ্ঠিত, মানুষের ভোটের অধিকার ভূলুণ্ঠিত। দেশের যুব সমাজ জেগে উঠছে এবং এই ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন হবে যুবকদের মাধ্যমে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. মোয়াজ্জেন হোসেন বলেন, দেশ জাতি আজ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। যুবকরাই দেশের সম্পদ কিন্তু আজ মাদক দিয়ে যুবকদের ধ্বংস করে দিচ্ছে। যুবকদেরকে বেকার করে কর্মহীন করে রাখা হয়েছে। মাদক নির্মূল করতে না পারলে যুবক সমাজকে রক্ষা করা যাবে না। যুবকদের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখার জন্য তার কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
সমাবেশে বিশিষ্ট জনেরা বলেন, অতীতে তরুণ ও যুবকেরাই জাতীয় জীবনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখে গেছেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, উসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে এ দেশের যুবসমাজের। বাংলাদেশ আজ চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশের যুবকেরা দেশকে রক্ষায় জীবন বাজি রেখেছিল, ঠিক তেমনি আজ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব অটুট ও নিরাপদ রাখার প্রয়োজনে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ যুব সমাজকে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে আধিপত্যবাদিদের রুখে দিতে হবে। যুব সমাজ ব্যর্থ হলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ম্লান হয়ে যাবে। ফ্যাসিবাদ মুক্ত দেশ গঠনে যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
এআরএস