চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করার দাবি

কাফনের কাপড় পরে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩, ০৪:১৮ পিএম

সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের এই দাবি না মানায় এবার কাপনের কাপড় পরে প্রতিবাদ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১০ দিনব্যাপী লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে সপ্তম দিনে এ প্রতিবাদ জানান তারা।

আন্দোলকারীরা জানান, মহামারি করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন থেকে দুই বছরের অধিক সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ সময় সব চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা বন্ধ ছিল। বাংলাদেশের প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়েই কমবেশি সেশনজট রয়েছে। ফলে সেশনজটের কারণেও শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন থেকে মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। এ ছাড়া, প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট অর্জন করতে গড়ে ২৫-২৬ বছর সময় লাগে। কিন্তু চাকরির বয়স ৩০ হওয়ায় তা খুবই কম সময় বলে তারা মনে করেন। সেজন্য তারা বয়স বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উন্নীত করার জন্য প্রায় ১০ বছর ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছে না। অথচ বিশ্বের ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর। আবার কোনো কোনো দেশে তা উন্মুক্ত।

এ বিষয়ে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক মো. শরিফুল হাসান শুভ বলেন, উন্নত বিশ্বের প্রতিটি দেশে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ বছর। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও একই অবস্থা। মেধা এবং যোগ্যতা থাকলে সার্টিফিকেট কেন প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াবে? আমরা আমাদের যোগ্যতা বলে চাকরি নিব। আমাদেরকে ত্রিশের বেড়াজালে আটকে রাখার কারণে আজকে আমাদের কাফনের কাপন পরে প্রতিবাদ করতে হচ্ছে। কাফনের কাপড় পরে আমরা সরকারকে বলতে চাই আপনারা আমাদের দাবিটি দ্রুত মেনে নিন।

তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারি ও নানা কারণে সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে আমাদের ২৬ থেকে ২৭ বছর লেগে যায়। বাকি থাকে তিন থেকে চার বছর যা খুবই অপ্রতুল। চাকরি আবেদনের বয়সসীমা বাড়ালে হাজার হাজার বেকার চাকরি পাবে আর যদি না পায় তাহলে তারা নিজের মতো করে অন্য ব্যবস্থা করে নেবে। ৩০ বছরের পরেও শিক্ষার্থীরা মেধার প্রমাণ দিচ্ছে। আপনারা জানেন জুডিশিয়ারি সার্ভিস কমিশন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ডাক্তাররা যদি ৩২ বছরে চাকরি নিয়ে মেধার প্রমাণ দিতে পারে। তাহলে আমরা কেন পারবো না। এই আন্দোলন প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর। লাখ লাখ শিক্ষার্থীরা আমাদের সমর্থন দিচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থীর সরাসরি আমাদের সাথে রয়েছে অনেকে অনলাইনের মাধ্যমে আমাদের সাথে রয়েছে। গতকাল অভিনব প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হাজার হাজার শিক্ষার্থী মিছিল করেছে। যেহেতু বাংলাদেশের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে সেহেতু আমাদের ত্রিশের বেড়াজালে আটকে না রেখে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা মিনিমাম ৩৫ করে দেওয়া হোক। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারও এই বিষয়টি উল্লেখ ছিল। সংসদ চলমান। আমরা আশা করি আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করে প্রশাসন আমাদের ঘরে ফেরাবে।

আজকের কর্মসূচিতে পরিষদের আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভর নেতৃত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদস্য সচিব মোহাম্মদ রাসেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব এ আর খোকন, যুগ্ম আহ্বায়ক অমিত বসাক শুভ প্রমুখ।

আরএস