দায়িত্বপালনের মাঝপথে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে অপসারণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এ প্রতিক্রিয়া জানায়।
এতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পত্রিকায় দেখলাম;‘জনস্বার্থে’ জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানের নিয়োগ চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। এ উদ্যোগ নদী রক্ষায় সরকারের অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তাহলে কী প্রভাবশালীদের স্বার্থরক্ষাকে ‘জনস্বার্থ’ বিবেচনা করা হচ্ছে? এ প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, দেশের সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হলো জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।তবে একে কার্যত অকার্যকর করা হয়েছে। এটি শুধু এখন সরকারকে পরামর্শ দিতে পারে। দখলদার ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে না।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক মনে করেন, দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে এ কমিশনকে শক্তিশালী করার বিকল্প নেই। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সদ্য সাবেক চেয়ারম্যানের সাহসী অবস্থানের কারণে দেশবাসী কিছুটা আশাবাদী হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। নদী দখলকারী, ধ্বংসকারী ও দূষণকারীদের সম্পর্কে জানতে পারছিলাম আমরা। জনমত সৃষ্টি আবহ তৈরি হচ্ছিল। নদী রক্ষা আন্দোলন বেগবান হচ্ছিল।
তিনি বলেন, জনগণ আশা করেছিলেন নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যানের অভিযোগগুলো আমলে নেবে সরকার। সেগুলোর তদন্ত হবে।পরে দোষীরা শাস্তি পাবেন। কিন্তু হলো উল্টো। কমিশন প্রধানই রোষানলে পড়লেন। দোষীকে, দোষী বলার ক্ষমতাও নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে সরকার।
এসময়ে এই বার্তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী বলে মন্তব্য করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে দেশে এখন নদীকে ‘জীবন্ত-সত্ত্বা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে। আমাদের উচ্চ আদালতের রায়েও স্বীকৃতি আছে। অথচ উল্টো পথে হাঁটছি আমরা। নদী হত্যাকারীদের দায়মুক্তি দিচ্ছি।
তিনি বলেন, সরকারপ্রধান বারবার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছেন। আশা করি, সেটা কেবল রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। তারা যেন এ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেন।
এইচআর