ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি, মাস্টারমাইন্ডসহ গ্রেপ্তার ১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২৪, ০৭:২২ পিএম

সম্প্রতি চালু হওয়া ঢাকা থেকে কক্সবাজার রুটে ট্রেনের টিকিট বিক্রি নিয়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কালোবাজারে দুই থেকে তিন গুণ দামে টিকেট বিক্রি করছে সঙ্গবদ্ধ চক্র। যাত্রীরা চাহিদা অনুযায়ী টিকেট না পেয়ে বেশি দামেই কিনছে ট্রেনের টিকিট।

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) এক বিশেষ অভিযানে রাজধানীর কমলাপুর, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি চক্রের মাস্টারমাইন্ড ও মূলহোতাসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যরা হলেন- সেলিম সিন্ডিকেটের মূলহোতা মো. সেলিম (৫০), ও তার প্রধান সহযোগী মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে কাশেম (৬২), শ্রী অবনী সরকার সুমন (৩৫), মো. হারুন মিয়া (৬০), মো. মান্নান (৫০), মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে ডাবলু (৫০), মো. ফারুক (৬২), মো. শহীদুল ইসলাম বাবু (২২), মো. জুয়েল (২৩), মো. আব্দুর রহিম (৩২) উত্তম সিন্ডিকেটের মূলহোতা উত্তম চন্দ্র দাস (৩০), তার প্রধান সহযোগী মো. মোর্শিদ মিয়া ওরফে জাকির (৪৫), আব্দুল আলী (২২) ও মো. জোবায়ের (২৫)। 

বৃহস্পতিবার রাতে সিন্ডিকেটের এই ১৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ হাজার ২৪৪টি রেলের বিভিন্ন রুটের টিকেট, ১৪টি মোবাইল ফোন এবং টিকেট বিক্রির নগদ ২০ হাজার টাকা। উদ্ধার করা হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, কমলাপুর ও বিমানবন্দর কেন্দ্রিক এই চক্রটি দিনে দেশের বিভিন্ন রুটের রেলের অন্তত পাঁচ শতাধিক টিকিট কালোবাজারে বিক্রি করত। আর এই সকল টিকিট বিক্রির টাকা চক্রের সদস্য ও রেল স্টেশনের কাউন্টার ম্যান থেকে শুরু করে বিভিন্ন কর্মকর্তারা ভাগ করে নিতেন। এমন কি এই চক্রে সহজ.কমের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে এলিট ফোর্সটি।  জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কমলাপুর রেলস্টেশনে সেলিম সিন্ডিকেটের মূলহোতা সেলিম এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশনে সিন্ডিকেটের মূলহোতা উত্তমের নেতৃত্বে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি করে আসছিল।

র‌্যাব আরও জানায়, টিকিট কালোবাজারের মূলহোতা সেলিম। ৩৫ বছর ধরে সে টিকেট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। তার নেতৃত্বেই গড়ে ওঠে এই চক্র। তার বিরুদ্ধে টিকেট কালোবাজারির দায়ে ৭টি মামলা রয়েছে। বহুবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেলেও মুক্তি পেয়ে আবারও একই কাজ করে আসছে। কাশেম ১৫ বছর ধরে চক্রের সঙ্গে জড়িত। সেলিমের অন্যতম প্রধান সহযোগী কাশেম। তার দায়িত্ব ছিল কাউন্টার থেকে ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করা। তার বিরুদ্ধে মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। উত্তম ছিলো টিকিট রাখার বিশ্বস্ত। তার কাছে সংগ্রহ করা সকল টিকিট মজুদ করা হত। এছাড়া চক্রর অন্য সদস্যরা দেশের বিভিন্ন রুটে টিকিট বিক্রির জন্য যাত্রী সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করত। সবার নামেই একাধিক মামলার তথ্য রয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, সেলিম ও উত্তমের এই চক্রে রেল স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে রেলের নিরাপত্তায় কর্মরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সদস্যরা জড়িত রয়েছেন। অনেকের বিষয়য়ে তথ্য পাওয়া গেছে। যা প্রত্যেক বাহিনীর উর্ধ্বতনদের জানানো হবে। এছাড়া র‌্যাবের গোয়েন্দাদের পাওয়া তথ্য রেলওয়ের কাছেও দেওয়া হবে বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

এইচআর