বায়তুল মোকাররমে ঈদের ৫ জামাত অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২৪, ১২:৩০ পিএম

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদুল ফিতরের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায় হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে সকাল ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। ঈদের নামাজ পড়তে মুসল্লিদের ঢল নেমেছিল বায়তুল মোকাররম মসজিদে।

ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ পড়তে ভোর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা বায়তুল মোকাররমে আসতে শুরু করেন। সকাল ৭টা বাজার আগেই মসজিদ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

ঠিক সকাল ৭টায় প্রথম জামাত শুরু হয়। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ, খুতবা ও মোনাজাতসহ প্রথম জামাত শেষ হয় সকাল সাড়ে ৭টায়।

মসজিদের খাদেম মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকেই মুসল্লিরা এসেছেন। প্রতিটি জামাতেই অনেক মানুষ হয়েছে।

মসজিদে প্রায় এক লাখ মানুষের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

জামাতগুলো শেষে মুসল্লিদের কোলাকুলি ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা গেছে। অনেকে নামাজ শেষে ও নামাজের আগে মোবাইল ফোনে সেলফি ও ছবি তুলতে তৎপর ছিলেন।

ঈদ জামাত উপলক্ষে সকাল থেকেই বায়তুল মোকাররমে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন ছিল। মসজিদের দক্ষিণ গেটের দুটি আর্চওয়ে দিয়ে প্রবেশ করেছেন মুসল্লিরা। গেটে পুলিশ এবং র্যাবের সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে।

ঈদের প্রথম জামাতে ইমাম ছিলেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির ছিলেন মসজিদের মুয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

সকাল সাড়ে সাতটার দিকে প্রথম জামাত শেষ হওয়ার আগেই দক্ষিণ গেটের বাইরে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি দ্বিতীয় জামাতে অংশ নিতে অপেক্ষা করতে থাকেন। প্রথম জামাত শেষে মুসল্লিদের বেরিয়ে যাওয়া এবং অপেক্ষমাণ মুসল্লিদের প্রবেশের সময় ব্যাপক জট লেগে যায়। পরের জামাতগুলোতেও ছিল একই পরিস্থিতি।

দ্বিতীয় জামাত হয় সকাল ৮টায়। মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহীউদ্দিন কাসেম এ জামাতে ইমাম ছিলেন। আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূর উদ্দীন তৃতীয় জামাতে ইমাম ছিলেন। সকাল ৯টায় তৃতীয় জামাত হয়।

চতুর্থ জামাত হয় সকাল ১০টায়। এ জামাতের ইমাম ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত হয় সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। মিরপুরের জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান এ জামাতে ইমামতি করেছেন।

নামাজ শেষে মোনাজাতে রমজানের রোজা, তারাবিহ, কোরআন তেলাওয়াত কবুলের জন্য আল্লাহর কাছে আর্তি জানানো হয়। গুনাহ মাফের জন্য অনেকেই চোখের জল ফেলে কাঁদতে থাকেন মোনাজাতে। আল্লাহর কাছে মৃত প্রিয়জনের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন।

মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা ছাড়াও ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য দোয়া করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।

ঈদ জামাত ঘিরে বিপুল সংখ্যক ভিক্ষুক ভিড় জমিয়েছিল বায়তুল মোকাররমে। অনেককে মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে ভিক্ষা করতে দেখা গেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছিলেন মুসল্লিরা। যাত্রাবাড়ী থেকে এসেছেন শাহরিয়ার হোসাইন। তিনি বলেন, আমি ঈদের সময় ঢাকায় থাকলে বায়তুল মোকাররমেই নামাজ পড়ি। একসঙ্গে অনেক মানুষ ঈদের জামাত পড়ার মধ্যে একটি চমৎকার অনুভূতি রয়েছে।

আজিমপুর থেকে ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে এসেছেন আশরাফ হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের পৈতৃক বাড়ি ঢাকাতেই। সুযোগ থাকলে আমি বাচ্চাদের নিয়ে ঈদের নামাজ পড়তে বায়তুল মোকাররমে আসি। ভালো লাগা থেকে এটা করি।

আরএস