এক দশকে গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ) বা সবুজ জলবায়ু তহবিলের ভূমিকা হতাশাজনক। নিজস্ব নীতিমালা লঙ্ঘন করে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানে অর্থায়ন করছে। অনুদানের পরিবর্তে অধিক পরিমাণ ঋণ প্রদানের ফলে বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশের ওপর বোঝা বাড়ছে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ‘বাংলাদেশের সবুজ জলবায়ু তহবিলে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের অভিগম্যতা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপন শেষে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জিএসএফে জবাবদিহিতা করার মতো কোনো অবকাঠামো নেই। প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব নীতিমালা লঙ্ঘন করছে ও বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। জিসিএফের ত্রুটি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের দেন দরবারের সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের যে অর্থ প্রয়োজন জিসিএফের মাধ্যমে সিংহভাগ আসার কথা। কিন্তু জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো সুফল পাচ্ছে না। তারা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে বেশি অর্থায়ন করছে। এটা গ্রহণযোগ্য না।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতি প্রতিরোধে জিসিএফের জিরো টলারেন্স নীতি থাকলেও ইউএনডিপির মতো বড় প্রতিষ্ঠানের জলবায়ু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ অমীমাংসিত রেখে তাদের পুন:স্বীকৃতি দিয়েছে। জিসিএফ ইউএনডিপিকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির গবেষক নেওয়াজুল মাওলা ও সহিদুল ইসলাম গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।
গবেষণায় জানানো হয়, জিসিএফের ঋণের অর্থ বিদেশি মুদ্রায় সুদের সঙ্গে ফেরত দিতে হয়। যা ঋণগ্রহিতা দেশগুলোর বহিঃ ঋণের বোঝা বাড়ায়। এর ফলে স্থানীয় মুদ্রার ওপরসহ জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে।
এতে আরও জানানো হয়, তহবিল নিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের অসম প্রতিযোগিতা বিরাজ করছে। দুর্নীতি প্রতিরোধসহ জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতার ঘাটতির অজুহাতে জিসিএফ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশে বেশি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
এসময় সংস্থাটির কান্ট্রি ওনারশিপ নীতিমালা স্পষ্ট করা, তহবিল বাড়ানো, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়াসহ একাধিক সুপারিশ করা হয়েছে।
আরএস