বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবসে বাংলাদেশ ফুড সেফটি ফাউন্ডেশন’র সেমিনার

আমার সংবাদ ডেস্ক: প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২৪, ০৪:৫২ পিএম

বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে র‍্যালি এবং মননে আহ্বান জানানোর মত বিষয়ে একটি সেমিনার রাজধানীর খামারবাড়িতে আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ফুড সেফটি ফাউন্ডেশন।

শনিবার (৮ জুন) খামারবাড়ির আ.কা.মু. গিয়াসউদ্দিন মিল্কি অডিটরিয়ামে বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবসের এ সেমিনারটির আয়োজন করা হয়।

এবারের থীম “নিরাপদ খাদ্যঃ অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি মোকাবেলায় করণীয়”। সে ভিত্তিতে সেমিনারের বিষয় ছিল “বিপর্যয় সহনশীল জাতির নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ অপ্রত্যাশিত ঘটনায় খাদ্য সরবরাহজনিত ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের ভূমিকা”। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্টিকালচার বিভাগের প্রফেসর ড. মো. কামরুল ইসলাম।

নিরাপদ খাদ্য একটি শেয়ার্ড রেসপনসিবিলিটি উল্লেখ করে ড. কামরুল ইসলাম তার প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, এতদসত্ত্বেও কিছু কিছু অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপদ হুমকিতে পড়ে। তথাপি আমাদের অনেক কিছু করার আছে যা আমরা পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক প্রতিহত করে খাদ্য নিরাপদ রাখতে পারি এবং ফলশ্রুতিতে অপুষ্টি ও অসুস্থতা এড়াতে পারি।

তিনি ১৮৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ডিভাস্টেটিং কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনার বা দুর্ঘটনার উল্লেখ করে তার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে উল্লেখ করেন, নিরাপদ খাদ্যের অভাবে এবং খাদ্য মজুদ থাকলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছানোর ব্যবস্থার অভাবে অনেক মানুষ মারা গেছে এবং পুষ্টির শিকার হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে তিনি খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা, খাদ্য ব্যবসায়ী এবং ভোক্তার পূর্ব প্রস্তুতি এবং করণীয় সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন।

প্যানেল আলোচক হিসেবে জনাব আবু নুর মোঃ সামসুজ্জামান, সদস্য, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ; ড. মুফতিখার আহমেদ, আন্তর্জাতিক কনসাল্টেন্ট, জনাব মনজুর মোরশেদ আহমেদ, সাবেক সদস্য বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ উক্ত প্রবন্ধের বিভিন্ন অংশের উপর তাঁদের পেশা এবং অভিজ্ঞতার আলোকে বিশ্লেষণ করেন এবং সম্পূরক তথ্য প্রদান করেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মিজ কাতারজিনা জোফিয়া জাব্লেগা, সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার, এফ এ ও, মিঃ মাইকেল জে পার, প্রজেক্ট ডিরেক্টর, ইউএসডিএ বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলেটেশন প্রজেক্ট, জনাব মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াজেদ, অতিরিক্ত সচিব (অব.) এবং সাবেক মহাপরিচালক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এবং জনাব বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যাঞ্চেলর প্রফেসর ড.আলী আকবর।

জাতিসংঘ ঘোষিত থীম এবং সেমিনারের বিষয় দু’টিই অত্যন্ত সময়োপযোগী বিষয় বলে মন্তব্য করেন এবং সকলকে স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক কভিড-১৯ থেকে আমরা শিক্ষা নিতে শুরু করেছি যে আপদকালীন সময় কীভাবে খাদ্য উৎপাদন বহাল রাখতে হবে এবং ভোক্তার নিকট পৌঁছে দিতে হবে। একই সাথে অন্যান্য দেশ কি কি পদক্ষেপ নিয়েছিল তা আমাদেরকে গভীরভাবে দেখতে হবে এবং শিক্ষা নিতে হবে। কিন্তু আমরা সেই কঠিন সময় অতিক্রান্ত করার পর সব ভুলে যাই। তিনি দেশে দেশে সাম্প্রতিক যুদ্ধের কথাও স্মরণ করে জানান যে এতে করে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত যেন না হয় সেজন্য শুধু খাদ্য নয় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুর প্রস্তুতি প্রয়োজন।

সেমিনারে খাদ্য ব্যবসায়ী, খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহ, সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিবৃন্দ এবং ভোক্তা প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন এবং তারও অনেকেই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় রেখে নানামুখো প্রশ্ন রাখেন এবং মতামত রাখেন।

উক্ত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. হামিদুর রহমান।
তিনি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বিভিন্ন আপৎকালীন সময় এবং অপ্রত্যাশিত ঘটনায় খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের কড়াকড়ি না করে খাদ্য ব্যবসায়ীগণকে সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। তেমনই সরকারের অন্যান্য সংস্থাকে সবকিছু দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিআরইউ