আসন্ন ঈদুল আজহায় ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঈদুল আজহার প্রস্তুতিমূলক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিজিএমইএর প্রতিনিধি, বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন।
বুধবার (১২ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো সিদ্ধান্তগুলো হলো:
১. সড়কপথে ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো নিজেদের মধ্যে আন্তঃসমন্বয়ের মাধ্যমে সব কার্যক্রম নেবে।
২. পুলিশ মহাপরিদর্শক যানজটমুক্ত ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে হটস্পট চিহ্নিতকরণ, হটস্পটে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্বশীল জনবলের উপস্থিতি ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় নিশ্চিত করবেন।
৩. মহাসড়কের পাশে কিংবা যত্রতত্র কোরবানির পশুর হাট স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তঃদপ্তর সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে।
৪. এফবিসিসিআই ও বিজেএমইএ তাদের কর্মীদের একসঙ্গে ছুটি না দিয়ে ধাপে ধাপে ছুটি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
৫. ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও যানজটমুক্ত রাখতে হটস্পট চিহ্নিতকরণ, হটস্পটে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ, দুর্ঘটনায় পতিত কিংবা বিকল যানবাহন তাৎক্ষণিকভাবে অপসারণে নিবিড় সমন্বয় ও কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার পাশাপাশি বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬. ঈদে ট্রেনযাত্রা, ট্রেনের টিকিটপ্রাপ্তি এবং শিডিউল রক্ষার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও কার্যক্রম নিতে হবে। বিশেষ করে টিকিটপ্রাপ্তিতে যেকোনো ধরনের ভোগান্তি, হয়রানি, প্রতারণা রোধে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭. অনলাইন প্ল্যাটফর্মে টিকিট বিক্রি নিবিড়ভাবে মনিটরিংসহ সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে নজরদারি করতে হবে।
৮. শিডিউল বিপর্যয় রোধে বিকল্প ট্রেন, রিলিফ ট্রেনের ব্যবস্থা এবং বিকল্প অতিরিক্ত বগি রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
৯. ঈদে ঘরমুখী ও ফিরতি মানুষের নৌযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
১০. নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন রোধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি নৌযানের ফিটনেস নিশ্চিত করতে হবে।
১১. লঞ্চ, ফেরি ও নৌ ঘাটের নিরাপত্তা, যাত্রীবান্ধব ঘাট ব্যবস্থাপনা এবং টিকিটপ্রাপ্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।
১২. ঈদে বিমানযাত্রায় সরকারি-বেসরকারি বিমান পরিচালনাকারী সংস্থা, বিশেষ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডকে তাদের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল বাড়িয়ে যাত্রীসেবা সুনিশ্চিত করতে হবে।
১৩. ঢাকা থেকে সৈয়দপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও সিলেটে বিমানের ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বড় বিমানের ব্যবস্থা করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
১৪. বিমানভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
এ ছাড়া সভায় আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর সহজলভ্যতা, পরিবহন, হাট ব্যবস্থাপনা, অনলাইন মার্কেট মনিটরিং, ঈদযাত্রা, কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, চামড়া সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা, ঈদের পর ফিরতি যাত্রাসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি, কার্যক্রম ও আন্তঃদপ্তর নিবিড় সমন্বয়, ঈদপূর্ব সময়ে নিত্যপণ্যের সরবরাহ, মজুত ও মূল্য নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়।
আরএস