প্রধানমন্ত্রী

টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পরিবার পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৪, ০৮:৫৮ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পরিবার পরিকল্পনা বিশ্বব্যাপী জীবনের মৌলিক অংশ হিসেবে স্বীকৃত। টেকসই উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে পরিবার পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

আগামীকাল ১১ জুলাই ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে দেয়া আজ এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘পরিবার পরিকল্পনা সেবাগ্রহীতার হার বৃদ্ধি পেলে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু কমে, মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ রোধ হয়। সন্তান কম থাকলে স্বল্প আয়েও আর্থিকভাবে সচ্ছল থাকা যায়। পরিকল্পিত পরিবার খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য মানবাধিকার পূরণের পাশাপাশি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে পরিবার পরিকল্পনার বিকল্প নেই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ১১ জুলাই ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস-২০২৪’ উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উপাত্ত ব্যবহার করি, সাম্যের ভিত্তিতে সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি’ যা অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।”

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার একটি দক্ষ ও পরিকল্পিত জনকাঠামো বিনির্মাণে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহীতার হার বৃদ্ধি, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা, পরিকল্পিত পরিবার গঠন, মা ও শিশু ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, প্রসবকালীন এবং প্রসব পরবর্তী সেবা, বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ মাতৃত্ব, কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্য, নারী শিক্ষা ও নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রসমূহে সার্বক্ষণিক প্রসূতি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে মিডওয়াইফ নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মাঠকর্মীগণ ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সেবাকেন্দ্রসমূহ এবং জাতীয় পর্যায়ের ৩টি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা, কৈশোরকালীন প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা এবং পুষ্টিসেবা ও পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছে। এর ফলে এক মাসের কম বয়সি শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২০ জনে ও মাতৃমৃত্যু হার প্রতি লাখে ১৩৬ জনে নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাই নারীদের বাদ দিয়ে এদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র এবং জনজীবনের সব ক্ষেত্রে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও জেন্ডার সমতা অর্থাৎ নারীর সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নারী উন্নয়নের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা নারী ও কন্যা শিশুর অধিকার এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য দূরীকরণ সনদ, বেইজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশনসহ সব আন্তর্জাতিক সনদ ও পদক্ষেপ অনুসরণ করে আমাদের সরকার কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজের সকল পর্যায়ে নারী ও কন্যা শিশুর গঠনমূলক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। বাল্যবিবাহ রোধ আমাদের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে যথাযথ উপাত্ত সংগ্রহ করে বাল্যবিবাহ নিরোধ করার জন্য আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর।’

তিনি বলেন, ‘আমি সুস্থ-সবল জাতি গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পিত পরিবার গঠনে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যম, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আরও সক্রিয় ও আন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আসুন, সকলে মিলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ তথা জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’

প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সফলতা কামনা করেন। -বাসস

আরএস