কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের বয়কট করে চলার ডাক দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে লেখালেখির মাধ্যমে হামলাকারী ও ছাত্রলীগকে বয়কটের ডাক এসেছে।
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্তদের বয়কট করে চলছেন। হামলাকারী ও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়দের স্ব স্ব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এর গ্রুপ থেকে রিমুভ দেওয়া হয়েছে।
বয়কটের ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলছেন, যারা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্লাস, পরীক্ষাসহ একাডেমিক কোন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেনা। হামলাকারী ও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়রা যদি ক্লাস, পরীক্ষায় অ্যাটেন্ড করার সুযোগ পায় তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস, পরীক্ষায় বসবে না। এছাড়াও তাদের সঙ্গে সবধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বলেন, সোমবার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো বর্বরোচিত ও নারকীয় হামলায় ইংরেজি বিভাগ, ১৪তম ব্যাচের (২০১৯-২০২০ সেশন) শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স ও রাইহানুল ইসলাম ভূঁইয়াকে হামলাকারীদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। এছাড়াও হামলাকারীদের হামলার প্রতি সমর্থন জানায় উক্ত ব্যাচের শারমিন সিমি। এর প্রেক্ষিতে ইংরেজি বিভাগ, ১৪ ব্যাচের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর সর্বসম্মতিক্রমে ছাত্র নামধারী এই হামলাকারীদের শ্রেণীকক্ষ, পরীক্ষা সংক্রান্ত এবং ব্যাচের অন্য সকল কার্যক্রমে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে। একই সাথে ডিপার্টমেন্টের অন্য ব্যাচের সাথে অধ্যয়নরত এবং হামলায় অংশ নেওয়া সকলকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার আহবান জানাচ্ছে।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের ও কোটা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেন। এরপর শিক্ষার্থীরা মলচত্বর এলাকায় মিছিল আসলে ছাত্রলীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং মহানগর ছাত্রলীগের নেতৃত্বে বহিরাগত ও বস্তির টোকাইদের নিয়ে এসে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা চালায়। এই হামলায় বস্তির টোকাই ও ছাত্রলীগ নারীদের গায়ে হাত তুলে শ্লীলতা হানি করেন। এছাড়াও প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এই হামলায় আহত হয়।
বিআরইউ