নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ নামে কর্মসূচি পালন করবে তারা।
আজ বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমাদের প্রাণের জন্মভূমি আজ এক মহাসংকট কাল অতিক্রম করছে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা হামলা পরিচালনা করে শান্তি প্রিয় ছাত্র-জনতার রক্তে রাজপথকে রঞ্জিত করছে। কারো পরিচয় শিক্ষার্থী হলে তার ফোন চেক করে অত্যাচার নির্যাতন চালানোর মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড অথচ আজ ছাত্র হওয়া যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক সমাজও রক্ষা পাচ্ছে না তাদের নির্যাতনের হাত থেকে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করতেও ছাড়ছে না।
শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সমর্থনকারী ছাত্র জনতা কাউকে পেলেই গ্রেফতার ও এর মাধ্যমে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পরবর্তীতে বাছাই করে পাড়া মহল্লায় রেইড দিয়ে গণ গ্রেপ্তারের নামে গ্রেফতার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে তারা। গুম করার হুমকি দিয়ে আদায় করছে মোটা অংকের অর্থ।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ জন সমন্বয়ক সহ অসংখ্য ছাত্র-জনতা কে গতকাল গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ কেন্দ্রীয় ৬ সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে ছেড়ে দিলেও এখনো ডাকসুর সাবেক সমাজ সেবা সম্পাদক আক্তার হোসেন, সমন্বয়ক আরিফ সোহেল সহ অসংখ্য ছাত্র জনতাকে কারাগার ও রিমান্ডে নির্যাতন করছে। জুলুম নির্যাতনে নিষ্পেষিত ছাত্র জনতা মুক্তির প্রহর গুনছে। অসংখ্য ছাত্র জনতা হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে। অনেক ছাত্র ও সাধারণ মানুষ চোখ, কান, হাত, পা কিংবা শরীরের অন্য কোন অঙ্গ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আজ ছাত্রসমাজ ঘরে শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না। প্রতিমুহূর্তে কাটাতে হচ্ছে গ্রেফতার ও গুম হওয়ার আতঙ্কে। শহীদ ও গুম হয়ে যাওয়া মানুষের স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠছে বাংলার আকাশ বাতাস। এছাড়াও আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলীর উপর ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলা করেছে পুলিশ নামক সন্ত্রাসীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষিকা শেহরীন আমিন মোনামী ও নুসরাত জাহান চৌধুরীর গায়েও হাত তুলেছে পুলিশের কিছু কর্মকর্তা। এই ঘৃণ্য হামলার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
কর্মসূচি: গণহত্যা ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং শিক্ষার্থীদের ৯দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া, শহীদদের কবর যিয়ারত, মন্দির, গির্জা সহ সকল উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন ও জুমার নামাজ শেষে ছাত্র জনতার গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
শ্রমিক, পেশাজীবি, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, বুদ্ধিজীবি, আলেম-ওলামা সহ বাংলাদেশের সকলস্তরের নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে আগামীকালের ‘প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সফল করে তুলুন।
মসজিদের ইমাম ও খতিবদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে চুপ থাকবেন না। মসজিদের মেম্বার থেকে প্রতিবাদের ঘোষণা দিন। মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আপনারাই জাতির দুর্দিনের কান্ডারী। এই দুঃসময়ে ঘরে বসে না থেকে গণহত্যা ও গণ গ্রেফতার এর প্রতিবাদে এবং ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বাদ জুমা মসজিদ ও মাদ্রাসা থেকে ‘ছাত্র জনতার গণমিছিল’ মিছিল বের করুন।
বিআরইউ