তথ্য মন্ত্রণালয়

সরকারের কাছে ৩২ শিশু নিহতের তথ্য নেই

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৪, ০৫:৫৮ পিএম

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় ৩২ শিশু নিহত হওয়ার কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই বলে জানিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

শনিবার (৩ আগস্ট) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে শুক্রবার (২ আগস্ট) জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক সঞ্জয় উইজে সেকেরারের দেওয়া বিবৃতি বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

সঞ্জয় উইজে সেকেরার বিবৃতিতে বলেছেন, জুলাই মাসে বিক্ষোভের সময় অন্তত ৩২ শিশু নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে ইউনিসেফ। এছাড়া অনেক শিশু আহত হয়েছে এবং অনেককে আটক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সম্প্রচার মন্ত্রণালয় জানায়, এ মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৩২ জন শিশু নিহত হওয়ার কোনো তথ্য নেই। এছাড়া ইউনিসেফের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালকের বিবৃতিতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রের উল্লেখ নেই এবং নিহতদের নাম, পরিচয়, প্রোফাইল বা তালিকা উল্লেখ নেই। তবে ইউনিসেফের পক্ষ থেকে নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রের উল্লেখসহ ৩২ শিশু নিহতের তালিকা সরবরাহ করা হলে বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, শিশুসহ বাংলাদেশের মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিত একটি মৃত্যুও কোনোভাবেই সরকারের কাম্য নয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে সরকার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।

ইউনিসেফের বিবৃতিতে বেআইনিভাবে শিশুদের আটকের বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সরকারের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জ্ঞাতসারে কোনো শিশুকে বেআইনিভাবে আটক করেনি। তদুপরি কোথাও এ সংক্রান্ত ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকলে তা জানা মাত্রই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে তথ্য মন্ত্রণালয় জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিন হত্যা মামলায় ১৭ বছর তিন মাস আট দিন বয়সী এক কিশোরকে আইনের আওতায় নেওয়ার যে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বক্তব্য হলো, এই কিশোর সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মাতুয়াইল হাসপাতালের বিপরীত পাশে এক পুলিশ সদস্যকে মেরে ঝুলিয়ে রাখার মামলায় ১৭ জন আসামির মধ্যে ১৬ নম্বর আসামি। সর্বশেষ তার রিমান্ডের আবেদন বাতিলপূর্বক শিশু আইন অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে তাকে গাজীপুরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সবসময় শিশুদের ব্যাপারে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং শিশুদের অধিকার সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর। শিশুদের নিয়ে যেকোনো আন্তর্জাতিক আইন, সনদ বা ঘোষণা মেনে চলতেও বাংলাদেশ সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কয়েকজন শিশু নিহত হওয়ায় ঘটনায় সরকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে।

পাশাপাশি শিশু হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে যেকোনো অপপ্রচার বা গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সরকার আহ্বান জানাচ্ছে।

আরএস