দমনমূলক শাসন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র ও যুব সমাজের নেতৃত্বে পরিচালিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ইতালির রোমে আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (আইএফএডি) ৪৮তম গভর্নিং কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পূর্বে ধারণকৃত মূল বক্তব্য সম্প্রচারকালে তিনি এ আহ্বান জানান। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাসে আইএফএডির অবদানের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের কৃষি ও জলবায়ু খাতে আইএফএডির চার দশকের সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়নে আইএফএডি-সমর্থিত প্রকল্পগুলোর তিনি প্রশংসা করেন।
তিনি তার ‘সোশ্যাল বিজনেস’ ধারণার কথা তুলে ধরে বলেন, এটি গ্রামীণ উন্নয়নে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা এমন একটি ইতিবাচক চক্র তৈরি করে যেখানে ব্যবসা সম্প্রদায়ের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে উন্নতি করে এবং দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হয়।
তিনি আইএফএডির প্রচেষ্টার সঙ্গে তার ‘৩ জিরো’ বিশ্বের (ধন-সংকেন্দ্রণ মুক্ত শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব, এবং শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ) দৃষ্টিভঙ্গির তুলনা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস আইএফএডির গভর্নিং কাউন্সিলকে জলবায়ু-সহনশীল অবকাঠামো, টেকসই কৃষিব্যবস্থা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি সমাধানে আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান, যাতে গ্রামীণ সম্প্রদায় পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উন্নতি করতে পারে।
কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে ও একটি উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলা যায় সেই লক্ষ্যে তিনি আইএফএডির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য সুযোগ সৃষ্টি করার আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভবিষ্যৎ নেতা ও পরিবর্তনের অনুঘটক হিসেবে তরুণ সমাজ ও ছাত্রদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, তাদের সৃজনশীলতা, উদ্ভাবনী চিন্তা এবং উদ্দীপনাই আমাদের সবার জন্য একটি উন্নত বিশ্ব গড়তে পারে।
বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের গভর্নিং বোর্ডের গভর্নর হিসেবে আইএফএডির এই সভায় বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
আরএস