ধর্ষকের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল চায় মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৫, ০৩:৫৯ পিএম

সারাদেশে চলমান নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং বিক্ষোভ মিছিল শেষের সমাবেশ তারা ধর্ষকের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ২০ বা ৩০ দিনের মধ্যে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি করেন।

আজ রবিবার (৯ মার্চ) ১.৩০ মিনিটে ক্যাম্পাসের মাল্টিপারপাস ভবনের সামনে থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে মাভাবিপ্রবির গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসের জননেতা আব্দুল মান্নান হলের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেয়। “তুমি কে আমি কে আসিয়া আসিয়া,ধর্ষকের সাজা একটাই ফাঁসি ছাড়া কোনো কথা নাই”ধর্ষকদের কারখানা, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় ‘ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’,
২৪ বাংলায় ‘ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’,ধর্ষকের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, জবাব চাই জবাব চাই’,“লজ্জা লজ্জা, ইন্টেরিম লজ্জা”,”ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই ধর্ষকের ফাঁসি চাই”, “নারীর প্রতি সহিংসতা চলবে না,চলবে না”, “আর কোন দাবি নাই,ধর্ষকের বিচার চাই”,”ধর্ষকের বিচার কি? ফাঁসি ছাড়া আর কি?”,”একশন টু অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন” ধর্ষকের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন ইত্যাদি।

বিক্ষোভ মিছিল এ আসা খাদ্য প্রযুক্তি ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সমাপ্তি খান বলেন,বর্তমানে ধর্ষণ শুধু একটি অপরাধ নয়, এটি মানবতার বিরুদ্ধে এক ভয়াবহ আঘাত। প্রতিদিন অসংখ্য নারী-শিশু এই পাশবিকতার শিকার হচ্ছে, অথচ বিচার ও প্রতিকার প্রায়শই অধরা থেকে যায়।আমরা আর কতদিন নীরব থাকবো? ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত ও নিরপেক্ষ হতে হবে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এই ভয়াবহতা থেকে রেহাই পাবে না। আসুন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে একসাথে রুখে দাঁড়াই। ধর্ষকের একটাই শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে।


বিক্ষোভ মিছিলে আসা অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জেবা সামিহা বলেন, আমরা আজ এখানে উপস্থিত হয়েছি নারীর প্রতি যে সহিংসতা ও নিপীড়ন নির্যাতন হচ্ছে এবং সারা বাংলাদেশব্যাপী যে অরাজক অবস্থা বিরাজমান হচ্ছে তা নিয়ে। বর্তমান এই ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট এর প্রতি আমরা ক্ষুব্ধ এবং তাদের ছয় মাসেরও বেশি সময় হয়ে গেছে এ সময় তাদের বর্তমান কার্যকলাপের প্রতি আমরা আশাহত। আমরা ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে একটি দেশ পেয়েছি, যেখানে আমাদের কথা শুনা হবে, আমাদের যে নির্যাতিত আওয়াজ শুনবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু আমাদের সরকারের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। ধর্ষণের ঘটনা ঘটার পর আমাদের পুরুষ সমাজ তখনো ঘুমিয়ে ছিল, এখনো ঘুমিয়ে আছে। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী তাদের থেকে আমরা এটা আশা করিনি।

বক্তব্যে ঐ নারী শিক্ষার্থী আরো বলেন, জুলাই বিপ্লবের বড় একটা অংশে ছিলাম আমরা নারী। পহেলা জুলাই শুরু হওয়া আন্দোলন যখন ঝিমিয়ে পড়েছিল তখন তনুর ছবিটাই সবাইকে আকৃষ্ট করে আন্দোলনের প্রতি। কিন্তু আজকের এই অবস্থায় আগে কি পরে কি নারীরা যদি সেফ ফিল না করি তাহলে এ আন্দোলন এখনো সফল নয়।”

বিজিই বিভাগের শিক্ষার্থী মো:মনিরুল ইসলাম বলেন, “আইনশৃঙ্খলা অবনতির কারণে সারাদেশে নারীদের ধর্ষণ, নির্যাতন মহামারির মত বাড়ছে। ধর্ষকের বিরুদ্ধে এখনি কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সবার সামনে ধর্ষকের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

সিপিএস বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আখতারুজ্জামান সাজু তিনি বলেন, “নারীকে পণ্য বানানোর যে সংস্কৃতি বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জ পর্যন্ত নারীদের মর্যাদাকর জীবন নিশ্চিত করতে হবে।”


ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী অ্যাথি বলেন, “নারী পুরুষের ভেদাভেদ থাকা উচিত নয়। বরং নারীদের সম্মানের চোখে দেখলে ধর্ষণের মত জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হত না।আজকে একটা শিশুও নিরাপদ নয়।

গত কয়েক দিনে সারাদেশব্যাপী অনেক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।এরই প্রতিবাদ স্বরূপ শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভ মিছিল করে ৷


বিআরইউ