সজীব ওয়াজেদ জয়: এক শব্দহীন অভিভাবক

ডা. এস এম বাদশা মিয়া প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৪, ০৮:০৩ পিএম

সজীব ওয়াজেদ জয়৷ শুধু একটি নাম নয়৷ তিনি একাধারে বঙ্গবন্ধুর নাতি৷ মমতাময়ী মা জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য পুত্র৷ একটি দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে যুগান্তকারী পরিবর্তন স্থাপনকারী ও ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার৷

তিনি একটি ধারণা দিয়ে পুরো বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য এক উচ্চতায়।

যিনি বাংলাদেশের হতাশাগ্রস্ত কোটি তরুণের মাঝে স্বপ্ন বুনে দিয়েছেন। যিনি তরুণদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর এক অনন্য পদ্ধতির সঙ্গে খুব সহজে যুক্ত করেছেন। তার ধারণায় গড়ে ওঠা ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসংস্থানের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তরুণ বা যুবশক্তিকে হতাশার বেড়াজালে আবদ্ধ না করে সম্ভাবনার অমিত দ্বার খুলে দিয়েছে।

আজ এই অনন্য চিন্তক সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন। ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই ঢাকায় তার জন্ম। বাংলাদেশ তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত। মুক্তিযুদ্ধ চলছে। ভয়াল সেই সময়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কোল আলো করে পৃথিবীতে আসেন তিনি।

তার সেই আলো ঠিকরে এখন বাংলাদেশের অনেককেই আলোকিত করেছে। আজ দেশব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুবশক্তির যে আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছে, তার পুরো কৃতিত্ব তারুণ্যে ভরপুর ভিশনারি সজীব ওয়াজেদ জয়ের।

আজকের সফল ব্যক্তিত্ব সজীব ওয়াজেদ জয় বরাবরই লেখাপড়ায় অন্যদের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। তার পিতা এম এ ওয়াজেদ মিয়া আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী। মা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতির এক অনন্য আলোকবর্তিকা সেটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

সেই বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান জয় লেখাপড়ায় কৃতী হবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু রাজনীতি বা দেশ গঠনের সঙ্গে যুক্ত থেকেও নিজেকে এখনো লেখাপড়া বা গবেষণায় ব্যাপৃত রেখেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী আইসিটি উপদেষ্টা হিসেবে তিনি যেমন দেশের মানুষের তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন, তেমনি তার স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধার কারণে আজ বিশ্বব্যাপী আমাদের তরুণরা নিজেদের দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ পেয়েছে। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে অনেক তরুণের জীবন বদলে গেছে। দেশের সাধারণ মানুষ ঘরে বসেই পাচ্ছেন হাজারো সুবিধা।

সামাজিক-অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই ডিজিটাল বাংলাদেশে এনেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। শুধু কি তাই, রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও আজ ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার ও অপব্যবহার চলছে। আর এই অর্জনের নেপথ্যে রয়েছে তার নিরন্তর প্রচেষ্টা।

উচ্চশিক্ষিত জয় বরাবরই মেধাবী একজন মানুষ। তিনি পদার্থ বিজ্ঞান, গণিত শাস্ত্র ও কম্পিউটার সায়েন্সে ব্যাচেলর ডিগ্রি নিয়েছেন ব্যাঙ্গালুরু ইউনিভার্সিটি থেকে। ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে পড়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে। হারভার্ড কেনেডি স্কুল থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়েছেন।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বিবেচনায় ইয়ং গ্লোবাল লিডার জয় শুধু বাংলাদেশের গর্ব নন, তিনি তার স্বীয় যোগ্যতায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নিজের মেধার স্বাক্ষর রাখতে পেরেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সরাসরি সম্পৃক্ত না হলেও সরকারের নীতিগত অনেক সিদ্ধান্তে তার অংশগ্রহণের আভাস পাওয়া যায়। আনন্দের বিষয় হলো, তার সেই অংশগ্রহণ ইতিবাচক ও সময়োপযোগী বলে প্রমাণিত হয়েছে।

আওয়ামী লীগে আজ তরুণ শক্তির যে জয়-জয়কার এর নেপথ্যে তার ভূমিকা রয়েছে বলে অনেকের দৃঢ় বিশ্বাস। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের মধ্যে অন্তত দু’জন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে অনেকেই জানেন। তাদের একজন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, অন্যজন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

এ দু’জনের পারফরমেন্সই আশার আলো দেখাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে জুনাইদ আহমেদ পলক যথেষ্ট পারঙ্গমতার পরিচয় দিয়েছেন। আর মোহাম্মদ আলী আরাফাত তার গবেষণা, তথ্য-উপাত্তসহ বক্তব্য-বিবৃতি প্রদানের মাধ্যমে এরই মাঝে আস্থাভাজন হয়ে উঠেছেন দেশবাসীর কাছে।

ব্যক্তিগতভাবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্মার্টনেস শুধুমাত্র মুখশ্রী বা তারুণ্যে ভরা চলনবলনে নয়, তার জ্ঞানের আলোকচ্ছটা এবং বক্তব্য-বিবৃতিতেও সেই স্মার্টনেসের সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়ে। সময়োপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে যে আলো ধারণ করেছেন তিনি, তা ছড়িয়ে দেওয়াতেই বোধ হয় সবচেয়ে বেশি আনন্দ পান।

দেশের তরুণ সমাজের সঙ্গে তার কথোপকথন, ভাবনা বিনিময়ে তেমনটিই লক্ষ্য করা যায়। সমস্যা-সংকট জিইয়ে না রেখে বা সমস্যা-সংকটকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে মোকাবিলা করার অনন্য প্রচেষ্টা দেখা যায় জয়ের মধ্যে।

যেকোনো আসরে তাকে দেখা যায়, তিনি খুব মনোযোগী শ্রোতা। তরুণ ও যুবাদের সব কথা তিনি মন দিয়ে শুনে প্রতিটি বিষয়ে স্পষ্ট জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেন। যুবসমাজের একাংশকে তিনি শক্তিতে রূপান্তরিত করেছেন আপন সৌকর্যে।

মধ্য বয়সেও তারুণ্যে ভরপুর এবং জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত তিনি সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশের প্রাণশক্তি হয়ে উঠবেন সেটা তার জীবনাচারে পাওয়া যায়। আচার-আচরণে তিনি যেমন অত্যন্ত বিনয়ী, তেমনি কর্মস্পৃহায় রয়েছে নিজস্ব স্টাইল।

সময়কে ধারণ করে সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকার প্রত্যয় দেখা যায় তার মধ্যে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরবর্তী কাণ্ডারি বা শেখ হাসিনার উত্তরসূরি কে হবেন সেটা এখনো স্পষ্ট নয়।

তবে সজীব ওয়াজেদ জয় সেক্ষেত্রে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে পারবেন সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি জয় ভবিষ্যৎ স্মার্ট বাংলাদেশের প্রধান কারিগর হয়ে উঠতে পারবেন আপন আলোয় সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

জন্মদিনে বাংলাদেশের তরুণ ও যুবসমাজসহ দেশবাসীর পক্ষ থেকে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্য অনেক শুভকামনা। তিনি শুধু দীর্ঘায়ুই হোন তা নয়, সুস্থতার সঙ্গে বাকী জীবন বেঁচে থাকুন এই প্রত্যাশা। হয়তো সামনের কোনো দিনে বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তির আলোয় আলোকিত করার বীরযোদ্ধা সজীব ওয়াজেদ জয় স্মার্ট বাংলাদেশের অনিঃশেষ কারিগর হয়ে উঠবেন।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও স্মৃতি পাঠাগার

ইএইচ