দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি থেকে জনগণকে রক্ষার জন্যই লোডশেডিং: হানিফ

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২২, ০৫:৫৩ পিএম

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, দেশে অর্থনৈতিক মন্দা যাতে দীর্ঘমেয়াদি না হয়, জনগণ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগ নিয়েছেন। বিশেষ করে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার অনুরোধ করেছেন। খরচ কমিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি থেকে জনগণকে রক্ষার জন্যই লোডশেডিং হচ্ছে।

তিনি বলেন, মহামারি করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। ডলার, ইউরোর দাম বাড়ছে-কমছে। তার ঢেউ বাংলাদেশেও লেগেছে। 

শনিবার (২৩ জুলাই) সকালে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে এরপরও লোডশেডিং হয় কেন? বিএনপি নেতাদের এমন প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন রেখে গিয়েছিলো। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি। তারা মানুষকে শুধু খাম্বা দিয়েছিলো। আর এখন বড় বড় কথা বলেছে। তাদের তো লজ্জা হওয়া উচিত।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মিথ্যাচারের রাজনীতি পরিহার করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল বলছেন বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ধারাবাহিকতার অংশ। আপনারা কোন উন্নয়নের ধারাবাহিকতা সৃষ্টি করেছিলেন। জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন। তারা এমন কোন উন্নয়ন কাজ করেছেন। উন্নয়নের একটা নজির দেখানোর জন্য বলেছিলাম। একটাও দেখাতে পারেননি। তারা হাওয়া ভবন বানিয়ে লুটপাট করেছেন। আর এখন প্রতিদিন দুর্নীতির ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছেন।

বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রিজার্ভ নাকি সবচেয়ে নিম্ন পর্যায়ে। আপনাদের সময়ে কত ছিলো? এই সংকটের সময়েও দেশের রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলার। ২০০৬ সালে বিএনপির সময় ছিলো সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার। তারেক জিয়া দুর্নীতি, সন্ত্রাস, হত্যা ও খুনের দায়ে বিদেশে পলাতক। বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নাড়ছে। হাওয়া ভবন, খাওয়া ভবন বানিয়ে দেশে লুটপাট করেছে। এখন তারা সরকারের বিরুদ্ধে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করছেন। সার, বিদ্যুৎ না দিতে পেরে উল্টো গুলি করে মানুষকে হত্যা করেছে। কৃষি, বিদ্যুৎ খাতে ধস নেমেছিল। আজ আমরা কৃষিখাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এরপরও তারা কিভাবে মিথ্যাচার করে? মিথ্যাচার করতে আপনাদের লজ্জা হয় না? প্রশ্ন রাখেন তিনি।

হাওয়া ভবনের দুর্নীতি দেখে অভ্যস্ত বিএনপি নেতারা উন্নয়ন দেখেন না- এমন মন্তব্য করে হানিফ বলেন, দেশের রফতানি আয়, রেমিটেন্সে সর্ব্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। কর্ণফুলী টানেল, পায়রা বন্দর, মাতারবাড়ি ডি সি পোর্টসহ অজস্র উন্নয়ন কর্মকান্ড হচ্ছে। বিএনপি নেতারা উন্নয়ন দেখে না, তারা দেখে শুধু দুর্নীতি। খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ মামলায় আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত। তার বিরুদ্ধে নাইকো, গ্যাটকো মামলাও আছে। যারা এতিমের টাকার লোভ সামলাতে পারেনি। বিএনপির সব নেতাই দুর্নীতিবাজ। তারা আজ সরকারের দুর্নীতি খুঁজে বেড়ায়।

আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপি আমলে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিলো ৫০০ ডলার। আজ ২৯শ ডলারে পৌঁছে গেছে। আমরা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পৌঁছে গেছি। আর ৬-৭শ’ ডলার হলে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবো। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৩১ সালের আগেই আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।

এবি