ইভিএম ভোট ডাকাতির মেশিন

ড. কামালকে ইমাম মেনে বিএনপির পরিকল্পনা ধূলিসাৎ হয়েছে: খন্দকার মোশাররফ

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২২, ০৫:৪১ পিএম

গণফোরামের একাংশের প্রধান ড. কামাল হোসেনকে ঈমাম মেনে বিএনপির সব চিন্তাভাবনা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত ‍‍`সরকার ইভিএম-এ নির্বাচন করতে চায় কেন‍‍`? শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভার তিনি এ মন্তব্য করেন।

মোশাররফ বলেন, ‘বিএনপির মতো একটা জনপ্রিয় দল ড. কামাল হোসেনকে আমাদের ঈমাম বানিয়েছিলাম। কিন্তু নির্বাচন ঘোষণার পর তিনি বললেন নির্বাচনই করবেন না।

আমরা এত কষ্ট করে যে রুপরেখা তৈরি করেছিলাম ড. কামাল হোসেনের সেই বক্তব্যের পর আমাদের সকল ভবিষ্যত চিন্তাভাবনা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। ফলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মতো একটি দলকে এই সরকার ৫ না ৬টা আসন দিয়ে বিদায় করে দেয়।’

তিনি বলেন, সরকারবিরোধী অনান্য দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি। তাদের মতামত নিয়ে আমরা এটা সমৃদ্ধ করতে চাই। আজকেও আমাদের মহাসচিব একটি দলের সঙ্গে আলোচনা করছেন।

এই আলোচনা শেষে দেশে ‌আমরা একটা মঞ্চ করতে পারবো নাকি যুগপৎ আন্দোলন করতে পারবো, এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত হবে। সকলের মতামতের ভিত্তিতে দলের একটা রুপরেখা তৈরি হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা বলেছি এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব না। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, এই সরকার আগামী ২০২৩ এর নির্বাচন করে যেতে পারবে না।

তিনি বলেন, সংলাপে অংশ নেওয়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএমের বিপরীতে মত দিয়েছে। আমরা তা চাই না। সুতরাং এটা তো এখানেই মীমাংসিত হওয়া উচিৎ। যে দেশের মানুষ নিজের হাতে ভোট দিতে পারে না।

তারা কীভাবে মেশিনে ভোট দেবে? এই ব্যবস্থা তো বিশ্বে বাতিল করা হয়েছে। কারণ এটা মানুষের তৈরি। সেখানে পেপার ট্রেইল নাই। সুতরাং এটা দূরভিসন্ধিমূলক। এটা ভোট ডাকাতির মেশিন।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন তিনি নাকি লোডশেডিং জাদুঘরে পাঠিয়েছেন। কিন্তু আজকে ছয় থেকে আট ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এখন তিনি বিএনপিকে হারিকেন দেয়ার কথা বলছেন। 

সেটা করতেও তে ৪/৫ কোটি হারিকেন কিনতে হবে সেই টাকাও তো তাদের নেই। আজকে সামাজিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রে সংকট চলছে। 

শ্রীলংকার যে সংকট একই সংকট বাংলাদেশেও। এটা তো বেশিদিন লুকিয়ে রাখা যায় না। সময় আসছে বাংলাদেশে সেই অবস্থা দেখবেন।

‘এখন শুধু রাস্তায় মানুষের ঢল নামা বাকি। আমরা রাস্তায় সংকটের সমাধান করবো ইনশাআল্লাহ। সেই ইতিহাস ও অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। 

ইয়াহিয়া খানের মতো শাসক টিকতে পারেনি। সুতরাং কারফিউ বা অন্য কোনোভাবেই ক্ষমতা রক্ষা করতে পারবেন না। রাস্তায় নামলে তদের পতন হবেই হবে।’

‘শ্রীলঙ্কায় দুই ভাই ১৮ বছর শাসন করেও শেষ রক্ষা হয়নি। অতএব রাস্তায় নামার বিকল্প নেই। মানুষ দুরবস্থার মধ্যে আছে। তারা একটা পরিবর্তন চায়। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘ইভিএম কোনো কাজের জিনিস না। বিগত দুই নির্বাচন তারা ডাকাতি করেছে। বিশ্বের বহু দেশ ইভিএম বাদ দিয়েছে। ইভিএমের জারিজুরি চলবে না। 
কিন্তু সরকার সে পথেই যাচ্ছে। সেজন্য লড়াইয়ে যেতে হবে। এই আন্দোলন বিএনপি ছাড়া সম্ভব নয়। সরকার লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিপীড়ন করেছে।

তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এই সরকার টিকতে পারবে না। পুলিশ ছাড়া টিকতে পারবে না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজপথ দখল হয়ে যাবে।

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার ফের ইভিএম ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকতে চায়।


আমারসংবাদ/টিএইচ