ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতিসহ ২ জন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।
বৃহস্পতিবার (০৪ আগস্ট) ভোর থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল করেছে। ভোলা সদর রোডের কালীনাথ বাজার এলাকায় দলীয় কর্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছে নেতাকর্মীরা। তবে পুলিশের দাবি, শহরের পরিস্থিতি অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক রয়েছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন, গতকাল রাতেই আমাদের হরতাল পণ্ড করার জন্য পুলিশ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়েছে। কিন্তু নেতাকর্মীরা নিরাপদ স্থানে ছিল। সকাল থেকে প্রশাসনের ভয় উপেক্ষা করে সবাই দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর বিক্ষোভ মিছিল শেষে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভা থেকে দিনব্যাপী হরতালের ঘোষণা দেন।
গত রোববার পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় নুরে আলম আহত হন। এরপর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয় এবং লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানে বুধবার বিকেল ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে এই ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
নুরে আলমের মৃত্যুর প্রতিবাদে বুধবার বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভোলা জেলা বিএনপি। ওই মিছিল থেকেই বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত রোববার গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে ভোলা জেলা বিএনপি শহরের মহাজনপট্টিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে।
জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শেষে আড়াই শতাধিক নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল করতে রাস্তায় নামলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩৩টি কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ১৬৫টি শটগানের গুলি ছোড়ে।
সংঘর্ষকালে আবদুর রহিম মাতব্বর নামের স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা গুলিবিদ্ধ হয় নিহত হন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতাল ও পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন রাতেই নুরে আলমকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে দুদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে তিনি মারা যান। এ ছাড়া ওই সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে আরও অনেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ইএফ