কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। শ্রীলঙ্কা, জাপান কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। বাংলাদেশেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। নির্বাচন পরিচালনা করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।’
তিনি বলেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস জনগণ। সবসময় জনগণের সমর্থন নিয়েই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। বিএনপির মতো চোরাগলি পথে ক্ষমতায় আসেনি’।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবির মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স সার্ভিস এসোসিয়েশনগুলোর নেতাকর্মীদের দুইদিন ব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির নানা রকমের হুমকির কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ কোনো হুমকিতে ভয় পায় না। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস জনগণ। সবসময় জনগণের সমর্থন নিয়েই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। বিএনপির মতো চোরাগলি পথে, নানারকমের ষড়যন্ত্র করে কোনো দিন ক্ষমতায় আসেনি। কাজেই, জনগণকে নিয়েই আমরা বিএনপির আন্দোলনকে মোকাবেলা করব।”
ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। দেশে কোনোভাবেই আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।”
তিনি বলেন, “দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিএনপি অস্থির হয়ে পড়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে আন্দোলন করছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর হবে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন ইসি’র অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে।”
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ও পুলিশ সদস্যদের লিস্ট করার জন্য বিএনপির এক সিনিয়র নেতার হুমকির জবাবে মন্ত্রী বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের দায়িত্ব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করা। আমরা নির্বাচিত সরকার। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া, ব্যবসা বাণিজ্যের নিরাপত্তা দেওয়া, দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা ও উন্নয়নকে আরও গতিশীল করা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। এটি করার জন্য যা যা করা দরকার আমরা তাই করব। কাজেই, আমাদেরকে হুমকি দিয়ে ভয় দেখাবেন না। সাবধান করে দিচ্ছি, আমরা যে কোনো পরিস্থিতিতে আপনাদের কঠোরভাবে মোকাবেলা করব।”
বিএনপির আমলে প্রতিবছর দেশে দুর্ভিক্ষ হতো উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “বিএনপির সময় আশ্বিন-কার্তিক মাস আসলেই দেশে মঙ্গা হতো, দুর্ভিক্ষ হতো। প্রতিদিন মানুষ না খেয়ে থাকতো, না খেয়ে মানুষ মারাও যেতো। আর এখন বিশ্বব্যাপী চরম সংকটের সময়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও দূরদর্শিতায় দেশে খাদ্য সংকট নেই, একটি মানুষও না খেয়ে নেই।”
অনুষ্ঠানে আইডিইবির সভাপতি একেএম এ হামিদ, সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমান, আব্দুল মোতালেবসহ নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স সার্ভিসসমূহের শতাধিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
দেশের কৃষির বিষয়ে ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের কৃষকরা রক্ত-ঘাম ঝরিয়ে ফসল ফলায়। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এখন রফতানিতেও অনেক এগিয়েছে। এ সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্লাস্টিকের ফুল ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানে প্লাস্টিকের ফুল ব্যবহার করবেন না। এগুলো নদীর জন্য ক্ষতিকারক। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। ফুলের চাষ হয় দেশে। নিজেদের উৎপাদিত ফুল ব্যবহার করতে হবে। এতে কৃষকেরও লাভ হবে, পরিবেশও ঠিক থাকবে।’
ইএফ