বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষ মুক্তি চায়। তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এখন লড়াই করে আমাদের জয়ী হতে হবে। এই সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। রাজনীতির কাঠামোকে হত্যা করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এই সরকার আন্দোলন করেছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় এসে সেই পদ্ধতি বন্ধ করেছে।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে রাজশাহী নগরীর ঐতিহাসিক ঈদগাহ মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজশাহীর গণসমাবেশের উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, গত তিন দিন ধরে পদ্মার ঠাণ্ডা বাতাস গায়ে হু হু করে লেগেছে। তারপরও আপনারা এখান থেকে এক বিন্দুও সরেননি। খেয়ে না খেয়ে। কিসের ভালোবাসায়, কিসের তাগিদে আপনারা তিন ধরে এখানে কাটালেন? কারণ আপনারা মুক্তি চান। ভয়াবহ দানবের হাত থেকে আপনারা মুক্তি চান।
তিনি বলেন, রাজশাহীর মাটি সংগ্রামের মাটি। শাহ মখদুম সাহেবের ভূমি এটা। এটা সেই জায়গা যেখানে মানুষ ন্যায়ের পক্ষে সংগ্রাম করেছে। বিদ্রোহ করেছে। অনেক বরেণ্য মানুষ সৃষ্টি হয়েছে। এই মাটিতেই তারা গড়ে উঠেছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়, সব সেক্টরে দুর্নীতি করে লুটেরা দলে পরিণত হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ৬০০ নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছে। এর মধ্যে পাবনার ঈশ্বরদীতে জাকারিয়া পিন্টুসহ ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। ২৫ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে। এটাই এই সরকারের চরিত্র। এভাবে তারা বিরোধীদলকে নির্মূল করে দিতে চায়। এতে কি নির্মূল হয়েছে? রাজশাহীর মানুষ ভয় পেযেছে? পায়নি। আরো উত্তাল হয়ে জেগে উঠেছে। এই লড়াইয়ে আমাদের জয়ী হতেই হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, যে দেশে গণতন্ত্রকে প্রতিদিন হত্যা করা হচ্ছে, সেই দেশের সরকার প্রতিদিন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের কথা বলছে। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরা কোন দেশে বাস করছি, যে দেশে প্রধানমন্ত্রী খারাপ কাজ করলেও সমালোচনা করা যায় না। আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্র একটাই- যেমন করেই হোক ক্ষমতায় বসে থাকা।
তিনি বলেন, অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এরপর নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। যেই সরকার নতুন স্বপ্ন দেখাবে। এখন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং নিহত সহযোদ্ধাদের রক্তের বদলা নিতে হলে আমাদেরকে জেগে উঠতে হবে। দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
টিএইচ