‘শুধু দল নয়, রাষ্ট্র পরিচালনায়ও শেখ হাসিনার বিকল্প কেউ নেই’

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২২, ০৬:১৪ পিএম

আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের দলে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই এবং আওয়ামী লীগের প্রত্যেক কর্মী সমর্থক চায় শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে আছেন, ততদিন দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাবেন। তিনি শুধু দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাবেন সেটি নয়, আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করার ক্ষেত্রেও শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প আজকে বাংলাদেশে নেই।

তিনি যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, একটি অনুন্নত দেশকে আজ যেভাবে উন্নয়শীল দেশে উন্নীত করেছেন, উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার যে প্রাণান্তর প্রচেষ্টা, আজকে বিশ্ব সম্প্রদায় সেটির প্রশংসা করছে। তার বিকল্প আওয়ামী লীগে কেউ নেই।’

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে দুটি বইয়ের মোড় উন্মোচন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রাম করার জন্যই ২০ দলীয় জোট করেছিল। তারা দেখতে পেল যে, ২০ দলীয় জোটের গাড়ি মোটেও এগোয়নি। এখন ২০ দল ভেঙে ১২ দল করলে আরো এগুবে না, পিছিয়ে যাবে।

যে ১২ দলের কথা বলা হচ্ছে তাদের অনেকগুলো দল অনভিজ্ঞ এবং এই ১২ দলীয় জোটের সম্মিলিত শক্তি আমাদের একটা থানায় কিংবা ঢাকা শহরের একটা ওয়ার্ডের শক্তির চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে কম। সুতরাং এগুলো আসলে জনগণ বিবর্জিত রাজনীতিবিদদের প্লাটফর্ম ছাড়া অন্য কিছু নয়।’

কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কূটনীতিবিদদের কথা বলা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাসের বিবৃতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘বিদেশী কূটনীতিকদের ভিয়েনা কনভেনশন মেনে চলা উচিত। রাশিয়ার দূতাবাস থেকে যে বিবৃতিটা দেওয়া হয়েছে সেখানে কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে। কিছু দেশ যখন কোনো সরকারকে চাপে রাখার চেষ্টা করে তখন তারা সংশ্লিষ্ট দেশে মানবাধিকারের ধূয়া তোলে।

অথচ দেখা যায় যারা মানবাধিকারের কথা বলে, সেসব দেশে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। একইসাথে কোনো দেশের রাজনৈতিক বিষয়গুলো যা একেবারেই অভ্যন্তরীণ, সেসব বিষয়েও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার বিষয়টিও বিবৃতিতে উঠে এসেছে। আমি মনে করি, যারা ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করে নানা ধরনের কথাবার্তা বলছিলেন, এই বিবৃতি তাদের বোধোদয় হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।’

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় আমাদের বাজেট প্রণয়নের জন্য অর্থমন্ত্রীকে প্যারিস কনসোর্টিয়ামের মিটিংয়ে ছুটে যেতে হতো। বাজেটের বেশির ভাগ অংশ আসতো অনুদান এবং ঋণ থেকে। এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। আমাদের বাজেটের বেশির ভাগ, প্রায় ৯০ শতাংশ আমরা নিজেরা যোগান দেই। অনেক ক্ষেত্রে আমরা বৈদেশিক ঋণ নেই না, প্রত্যাখান করি।

আমরা এখন কারো মুখাপেক্ষী দেশ না। বাংলাদেশ এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে। আমি মনে করি যখন কোনো বিদেশী কূটনীতিক আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করেন, সেটি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের অনেক ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপের মতো দাঁড়ায়। তবে এই ক্ষেত্রে আমি তাদেরকেই দোষ দেবো যারা ক্ষণে ক্ষণে বিদেশীদের কাছে ছুটে যায় এবং তাদের পদলেহন করে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলার জন্য উদ্বুদ্ধ করে, তারাই প্রকৃত দোষী।’

এসময় সাংবাদিকরা বারবার পদ নিয়ে প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী, তিনিই আমাদের সুপ্রিম লিডার। কে কোন পদে থাকবেন তিনিই ঠিক করবেন।’

সাংবাদিকদের সাথে প্রশ্নোত্তরের আগে অর্জন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত এবং এইচ এম মেহেদী হাসান গ্রন্থিত ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ শেখ হাসিনা’ এবং ‘বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ’ দু’টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, প্রকাশক আবু হাশেম সরকার, উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও গণমাধ্যমকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

টিএইচ