পঞ্চগড়ে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে পঞ্চগড় সদর থানায় পাঁচজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে এসব মামলা দায়ের করেন। এসব মামলায় ৮১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও দেড় থেকে ২ হাজার নেতাকর্মীকে।
এর আগে গতকাল শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের আটজন নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, এদিন সদর থানার এসআই রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা প্রদান, দাঙ্গা সৃষ্টি, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর মারপিটের অভিযোগে ২২ জনের নামোল্লেখ করে আরও ১১শ-১২শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
একই অভিযোগে ১৬ জনের নামোল্লেখ করে আরও ১৫০-২৪৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন এসআই ভবেশ চন্দ্র রায়। অপরদিকে এসআই সাইদুল রহমান বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ১৩ জনের নামোল্লেখ ১৫০-২শ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
এ ছাড়া এসআই আলতাব হোসেন সরকার বাদী হয়ে ১৬ জনের নামোল্লেখ করে আরও ১২৫-১৩৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন এবং এসআই মাসুদ রানা বাদী হয়ে নামোল্লেখ করে আরও ১৫৫-১৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, ‘মামলায় প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না।’
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, ‘আমাদের ভাই (আব্দুর রশিদ আরেফিন) মারা গেছে। জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হলো। পরে দলীয় ও পারিবারিকভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরেফিনের লাশ দাফন
এদিন বিকেলে পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরেফিনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে তার গ্রামের বাড়ি জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের পাথরাজ গ্রামের হরিপুর জোত দেবীকান্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আরেফিনের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাকে হরিপুর চন্দ্রপাড়া গোরস্থানে দাফন করা হয়।
আরেফিনের জানাজায় বিএনপি নেতা ও দিনাজপুর পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, বোদা পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান সুজা, পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক মেয়র তৌহিদুল ইসলাম, পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদসহ বিএনপির জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, তার পরিবারের সদস্য, স্বজন ও এলাকাবাসীরা অংশ নেয়।
উল্লেখ্য, আরেফিন উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ওই ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে তবে এখনো কমিটি ঘোষণা হয়নি। তিনি ওই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী ছিলেন বলে জানিয়েছেন বোদা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব লাইলী বেগম।