জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সারাদেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩, ০২:৫২ পিএম

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোসহ ১০ দফা দাবিতে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি সারাদেশের ইউনিয়ন ইউনিয়নে পদযাত্রার কর্মসূচি পালন করবে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। এটি হবে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের ষষ্ঠ কর্মসূচি। 

সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে আল রাজি কমপ্লেক্সের সামনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়। 

ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, সরকারের দুঃশাসনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ আজ অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে সরকারের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেই। তারা ব্যস্ত দুর্নীতি ও লুটপাটে। লুটপাটের মাধ্যমে দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে। জনগণের দাবি মেনে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। অন্যথায় জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে আপনাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। এখন ১০ দফার ভিত্তিতে আন্দোলন চলছে, সামনে এক দফার আন্দোলন আসবে।

জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের এই সমন্বয়ক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অবিলম্বে দাবি না মানলে বিএনপি ও সমমনা জোটের পদযাত্রার এই কর্মসূচি সরকারের জন্য মরণযাত্রায় পরিণত হবে। তখন তারা পালাবারও পথ পাবে না। জনগণ তাদেরকে পালাতে দেবে না। 

ড. ফরহাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জাগপার একাংশের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী, মাইনোরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি মন্ডল, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুল ইসলাম, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। 
 
খন্দকার লুৎফর রহমান বলেন, সরকার বুঝতে পেরেছে তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। তাই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের অত্যাচার-নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু দমন-পীড়ন চালিয়ে আন্দোলনকে দমানো যাবে না। রাজপথে আজ জনতার ঢল নেমেছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই সরকারকে বিদায় করব। 

অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী বলেন, প্রতিটি ঘরে আজ নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে। নিত্যপণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। লুটপাট করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। সংকট উত্তোরণে আন্দোলনে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
 
এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার অনির্বাচিত হওয়ায় জনগণকে তারা কোনো তোয়াক্কা করে না। দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের উপর নিষ্পেষণ চালাচ্ছে তারা। ১৪ দিনের মধ্যে  বিদ্যুতের দাম দুইবার বাড়িয়েছে। প্রতিটি জিনিসের দাম আজ আকাশচুম্বী। 

তিনি বলেন, ১০ দফার ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক উপায়ে যুগপৎ আন্দোলন চলছে। এক পর্যায়ে এক দফার আন্দোলন আসবে।  সে আন্দোলনও হবে শান্তিপূর্ণ। 

সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি বলেন, নব্বই সালে আমরা যেভাবে আন্দোলনে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়েছি, একইভাবে যুগপৎ আন্দোলনে বর্তমান শেখ হাসিনা সরকারেরও পতন ঘটানো হবে।

এম এম শাওন সাদেকী বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই সরকারকে বিদায় করে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব। 

মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে এখন যুগপৎ আন্দোলন চলছে। আশা করি, অবিলম্বে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক দফার আন্দোলন আসবে। 

সমাবেশে বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের মহাসচিব এডভোকেট শাহ মোহাম্মদ বাদল, এনপিপির যুগ্ম মহাসচিব মো. ফরিদ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর জাগপার সভাপতি মো. হোসেন মোবারক, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

টিএইচ