চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিস্ফোরণের ঘটনার জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার দুপুরে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সাথে বৈঠকে পর বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল সীতাকুন্ডে এবং আজকে ঢাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে….। আমাদের প্রশ্ন এই বিস্ফোরণগুলো ঘটছে কেনো?’
‘সরকার যখন ব্যর্থ হয় তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে যারা এ বিষয়গুলোর দায়িত্বে রয়েছে সব কিছু সঠিকভাবে আছে কিনা। অর্থাত সেখানে যেন বিস্ফোরণ না ঘটে, কোনো দূর্ঘটনা না ঘটে। দূর্ঘটনা ঘটলে যেন মানুষের জীবন নাশ না হয় সেই ধরনে ব্যবস্থা নিচ্ছে কিনা। সরকারি সংস্থাগুলো সেই ব্যবস্থা নিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে এব সরকারের ব্যর্থতার কারণে এই ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।’
চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিস্ফোরণে নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব্।
‘পঞ্চগড়ে সাম্প্রদায়িক সংকট সরকারের সৃষ্টি’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পঞ্চগড়েও গতকাল চরম একটা চরম সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। দুইজন নিহত হয়েছে, দোকান-পাটসহ বাড়িঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন যে, এই ধরনের একটা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে সরকার চুপ করে থাকলেন কেনো? সেখানে সমাবেশ করা অনুমতিই বা দেয়া হলো কেনো বা পরবর্তিকালে যখন আক্রমন হয়েছে তখন পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেটা দেখল কেনো, সেটাকে তারা প্রতিহত করতে সক্ষম হলো না কেনো?’
‘এই যে সাম্প্রদায়িক সমস্যা সৃষ্টি করা, বিভেদ সৃষ্টি করা –এটা সরকার সৃষ্টি করছে। আমরা মনে করি তারা অত্যন্ত অসত উদ্দেশ্যে করছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ যখন গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করেছে, অধিকার আদায়ের জন্য যথন সংগ্রাম শুরু করেছে, দ্রব্যমূল্যের দাম যখন জনগনের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে, মানুষ যখন এই নিয়ে সোচ্চার হচ্ছে, মিছিল করছে। রাজনৈতিক দলগুলো যখন রাস্তায় নেমে এসেছে। তখন এই ধরনের ডাইভারশন করানো জন্য, শুধুমাত্র জনমনে বিভ্রান্ত করার জন্য, অন্যখাতে প্রবাহিত করার জন্য এই ধরনের সাম্প্রদায়িকতা ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন নশসাত করতে চায়।’
‘এই ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী আমরা করছি সরকারকে। তাদেরকেই জবাবদিহি করতে হবে এবং যারা দায়ী এই ঘটনার জন্য তাদের বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সাথে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি বৈঠক হয়। এই বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছিলেন।
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব হারুন আল রশীদ খান, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, নুরে আলম ও শাহজালাল মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক হারুন আল রশীদ খান বলেন, ‘আদানি গ্রুপের সাথে সরকারের বিদ্যুত চুক্তির বিষয়টাকে ঘুরানো জন্য পঞ্চগড়ে কাদিয়ানি ইস্যু তৈরি করা হয়েছে। এটা মানুষ এখন বলাবলি করছে। আপনারা দেখেছেন, কয়েকদিন আগে প্রাথমিক বৃত্তির ফলাফল নিয়ে সরকার কিভাবে বিতর্কিত করেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনে এক অরাজগ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।’
‘আমরা এখানে এসেছি বিএনপির সাথে আলোচনা করতে, এই আলোচনা ফলোপ্রসু হয়েছে। সরকারের পতন না হওয়া পর্য়ন্ত আমরা রাজপথে অবস্থান করে যুগপত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’
এবি