সরকারের পদত্যাগসহ ১০দফা দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চের মানববন্ধন

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৩, ১২:৪৮ পিএম

সরকারের পদত্যাগসহ ১০দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ শনিবার ১১ মার্চ ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে মানববন্ধন করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।

 গত ৪ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পদযাত্রা থেকেবএই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। তারই অংশ হিসেবে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। আজ সকাল সাড়ে ১১টায় পানির ট্যাংকের উল্টো পাশে হোটেল ফার্সের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। 

এ সময় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলি, আমরা এখন পর্যন্ত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ মেনে আন্দোলন করছি। তবে এই সময়েরও একটা সীমা আছে। সেই সীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা যদি থাকে, তাহলে প্রয়োজনে গলায় গামছা বেঁধে যাতে আমাদের দাবি আদায় করতে পারি আমরা সেই চেষ্টা করব।’

‍‍`আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় করতে চাই। সেই লক্ষ্যে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। সেটা করতে থাকব। আমরা বিজয় অর্জন করব- এই প্রত্যয় আমরা করি’, বলেন তিনি।

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের নাম করে দেশে একটা অশান্তি সৃষ্টি করার পায়তারা করছে। ভয় ও আতঙ্কের কারণে ইতোমধ্যে মানুষ এর নাম দিয়েছে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘আজকে নির্লজ্জের মতো একটা সরকার যখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে, কীভাবে মানুষকে স্বস্তি দেওয়া যায় তার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং এই দ্রব্যমূল্য যারা বাড়াচ্ছে, কীভাবে আরও সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বাড়ানো যায়, আরও টাকা হাতিয়ে নেওয়া যায়, হাজার হাজার টাকা লুট করা যায় তার ব্যবস্থা করছে। আর সেখান থেকে কীভাবে ভাগ বসানো যায়, সেই কাজে ব্যস্ত মন্ত্রী-আমলাসহ সরকারের সব লোকেরা।’

ব্রয়লার মুরগি আর ডিম খেয়ে গরীবেরা আমিষের চাহিদা মেটাতো, আজ ব্রয়লার মুরগীর দাম এত বেড়েছে যে তারা এখন তাদের সন্তানদের আমিষের চাহিদাও পূরন করতে পারছে না। ‘এভাবে তারা জনগণের জীবনকে আরও দুর্দশার মধ্যে ঠেলে দিয়ে, তাদের জীবনের নাভিশ্বাস তুলে কীভাবে টাকা কামিয়ে নেওয়া যায়, আর বিদেশে পাচার করা যায় তার ব্যবস্থা করছে। কারণ এদের কোনো চিন্তা নেই। এরা মনে করছে দ্রব্যমূল্য যতই বাড়ুক আমাদের হাতে দুটি অস্ত্র আছে, সেই অস্ত্র দিয়ে আমরা ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখব। একটা হচ্ছে- আমরা দেশের মানুষকে ভয় দেখাব। আরেকটা- ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বিদেশি প্রভুদের খুশি করা’, বলেন তিনি।

জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, যেভাবে লুটপাট করে দেশকে ফোকলা বানিয়ে দিয়েছে, এটা জনগণ পরিষ্কারভাবে বুঝে গেছে। এই লুটপাটের জমিদারি রক্ষা করার জন্যই আপনারা ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখতে চান।’ এরশাদের মত এই সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। জনগণ চুড়ন্ত আন্দোলনের ডাকের অপেক্ষায় আছে।

‘কাজেই এবার আর দমনপীড়ন আর বিদেশিদের খুশি করে আপনারা রেহাই পাবেন না। জনগণ আপনাদের রেহাই দেবে না। সারাদেশে মানুষ রাজপথ দখলে নিয়ে আপনাদের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে নামাবে। সেই লড়াইয়ের এখন প্রস্তুতি চলছে‍‍`, যোগ করেন তিনি।

এ সময় গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, দেশে এখন ডলার সংকটের কথা বলা হচ্ছে, এই ডলার সংকটের কথা আরো ৮/৯ মাস আগে বিশেষজ্ঞরা বলে এসেছিলো কিন্তু সরকার তা কর্ণপাত করে নাই। দেশে এই দুর্ভোগের জন্য এই অশান্তির জন্য আওয়ামী বাকশালী সরকারই দায়ী।

আমাদের কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্থ করতে ৭১ এর রাজাকার শান্তি বাহিনীর মত সরকার শান্তি সমাবেশ করছে বলেও মন্তব্য করে নুর। মানববন্ধনে গণতন্ত্র মঞ্চের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এআরএস