কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) এর প্রধান কার্যালয় আকস্মিকভাবে গতকাল বুধবার পরিদর্শন করেন এবং ইনস্টিটিউটটির যাবতীয় বর্তমান কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন।
এসময় ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্ত্রীকে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট এ স্বাগতম জানান।
পরিচয়পর্ব শেষে বিজেআরআই এর বিজ্ঞানীগণ তাদের কার্যক্রম বর্ণনা করেন এবং বিজেআরআই এর চলমান সকল কার্যক্রম মন্ত্রীকে অবহিত করা হয়।
এসময় মন্ত্রী বলেন, “করোনা মহামারির কারনে আমরা দুই বছর কার্যক্রমে পিছিয়ে গিয়েছি, কাজের ধারাবাহিকতা থাকলে হয়তো অর্জন আরো অনেক বেশি হতো। সম্পুর্ণ ক্রপিং সিস্টেমে, ফার্মিং সিস্টেমে পাট একটি উপাদান এবং খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। অর্থনৈতিক ভাবে এর গুরুত্বও অনেক বেশি।”
“বাংলাদেশ যে সোনার বাংলা নামে পরিচিত, বিশেষ করে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে জিনিসটা বেশি প্রচার করেছেন এবং বাংলাদেশকে তুলে ধরেছেন সোনার বাংলাদেশ হিসেবে, যা সোনালী আঁশ পাটকে কেন্দ্র করে হয়েছে। পাটের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে এবং আমাদের অর্থনীতিতে এর গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে পাটকে সোনালী আঁশ বলা হয়েছে এবং এটা বলে আজও আমরা গর্ববোধ করি, অহংকার করি।”
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “পানির অভাবে আমরা সোনালী আঁশকে যেভাবে চিন্তা করি সেভাবে এখন আর হয় না। একসময় এটাকে অর্থকরি ফসল হিসেবে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হতো। পাটের গুরুত্ব এখনো কমেনি। সম্প্রতি বহুমুখি ব্যবহারের কারণে বেসরকারি খাত পাটের দিকে এগিয়ে আসছে, ফলে গুরুত্বও বাড়ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যপারে খুবই আগ্রহী।”
মন্ত্রী বিজেআরআই এর বর্তমান কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন বিজেআরআই এর বিজ্ঞানিরা ভালো কাজ করছে, বিভিন্ন জাত উদ্ভাবন করেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিজ্ঞানিদের যেভাবে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়, কাজ করার পরিবেশ দেওয়া হয় এবং যে লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া হয় সেটা আমাদের দেশে দেওয়া হয় না। এমনকি কৃষিকে গুরুত্বে দেওয়া হয় না।
“আমাদের আগামীতে চেলেঞ্জ হলো মানুষের জীবন যাত্রার মান বাড়ানো। মানুষের জীবন যাত্রার মান, মেধাবৃত্তি বাড়ানোর জন্য, সৃজনশীলতা বাড়ানোর জন্য আরো অনেক বহুমুখী খাবারের প্রয়োজন। পশ্চিমা বিশ্ব এখনো আবিষ্কারের দিক থেকে এগিয়ে। আপনারাও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করবেন। পাট প্রাকৃতিক সম্পদ আমাদের আবহাওয়া, আমাদের জলবায়ুর অবস্থা এতই উপযুক্ত পাট উৎপাদনের জন্য, কিন্তু আমরা সেটা ব্যবহার করতে পারিনা। টেক্সটাইল ডিভিশনকে আরো বেশি উন্নত করা দরকার। ফলাফলকে বাড়ানো দরকার।”
তিনি আরো বলেন, “পাট গবেষণা বিজ্ঞানিগণ আপনারা আপনাদের গবেষণাকে টেকনোলজিতে যদি রুপান্তর না করতে পারেন, বানিজ্যিকি করণ করতে না পারলে সেই গবেষনার কোন মূল্য নেই। সেটা আপনাদের সামনে চেলেঞ্জ। সেই চেলেঞ্জকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। সারা জাতি তাকিয়ে আছে পাট গবেষণার বিজ্ঞানিগণ পাটের সোনালি সেই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনবে।”
“বেসরকারী বিভিন্ন জুট মিল মালিকরা বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে, পাটের বহুমূখী ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্হিবিশ্বে পাটের যে আগ্রহ সেটাকে যাদি আমরা সারা বিশ্বতে ছড়িয়ে দিতে পারি তবে পাটের প্রসার অনেক বৃদ্ধি পাবে।”
মন্ত্রীর বক্তৃতাকালে আরো উপস্থিত ছিলেন কারিগরি বিভাগের পরিচালক ইঞ্জিঃ মোঃ মোসলেম উদ্দিন, জুট টেক্সটাইল বিভাগের পরিচালক ড. ফেরদৌস আরা দিলরুবা, কৃষি উইং এর পরিচালক কৃষিবিদ ড. নার্গীস আক্তার, প্রশাসন ও অর্থ বিভাগের পরিচালক কৃষিবিদ ড. এস এম মাহবুব আলীসহ বিভিন্ন বিভাগের সিএসও, পিএসও, এসএসও, এসও-সহ সকল স্তরের কর্মকর্তাগণ।