আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াস সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেছেন, দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত। আপনি চেয়ারে আছেন বলে মনোনয়ন পাবেন এমন না। দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে।
অপরদিকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশে বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই দলকে হুমকি-ধামকি দিয়ে কোন লাভ হবে না। আমরা একাত্তারে আলবদর রাজাকারদের পরাস্ত করেছি প্রয়োজন হলে আবার তাদেরকে পরাজিত করা হবে।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে মেহেরপুরের মুজিবনগর আম্রকাননে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি সহ দলের একাধিক শীর্ষ নেতা এবং মন্ত্রী।
দেশের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তারা অব্যহত চেষ্টা করে যাচ্ছে- মেহেরপুরে মুক্তিযুদ্ধ বিষক মন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, একাত্তরে যারা দেশের স্বাধীনতা চাইনি তারা এখন আরও বেশি সংগঠিত। বর্তমান সরকারকে বিব্রত ও আমাদের মহান স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তারা অব্যহতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। আজ সকালে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর আম্রকাননে মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদেও এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথাগুলো বলেন।
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সরকার এসব অপশক্তি দমন করে রেখেছেন। তবে দেশী বিদেশী প্ররোচণায় তারা প্রায় সময়ই দেশের স্বাভাবিক অবস্থান বিপন্ন করার জন্য ষড়যন্ত্রণ করে যাচ্ছে। তাই সরকার, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধেও স্বপক্ষের শক্তির সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। সাংবাদিকদের আর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই বাছাই করে ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এখন রাজাকারদের নামের তালিকা তৈরী করা হবে। আইন সংশোধনের মাধ্যমে সেই কাজটি করার পথ খুলে গেছে।
মুজিবনগর দিবস পালনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পরে শেখ হাসিনা মে র সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মন্ত্রী। এসময় পুলিশ, বিজিবি, আনছার সদস্যদের গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, গালর্স গাইড, বিএনসিসি কুজকাওয়াজ প্রদর্শন করে। এই স্থানে বাংলাদেশ আনছার বাহিনী অর্কেস্টা দলের গীতিনাট্য জল, মাটি ও মানুষ প্রদর্শন করা হয়। যেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস এবং পর্যায়ক্রমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেভাবে বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে তা অধিনয়ের মাধ্যমে তুলে ধরেন আনছার আর্কেস্টা দলের শিল্পিরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, একাত্তরের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম সরকারের গার্ড অব অনার প্রদান বাহিনীর প্রদান আব্দুল হান্নান, মেহেরপুর পুলিশ সুপার রাফিউল আলমসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
এর আগে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে মুজিবনগর দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস। জাতীয় পতাকা উত্তোলনকালে মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী রাসেল সহ সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা তথা মুজিবনগর আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকার বা অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণ করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন রাষ্ট্রপতি। মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। যার মাধ্যমে স্বাধীনতার ইতিহাসের চির অম্লান হয়ে থাকবে মুজিবনগর। প্রতি বছর ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরের এই আম্রকাননে নানা আয়োজনের মাধ্যমে মুজিবনগর দিবস পালন করা হয়।
এআরএস