রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা নেই

জনদুর্ভোগ, গাড়ি ভাঙচুর, হত্যা চেষ্টা করলে প্রতিহত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৩, ০৯:৫৩ পিএম

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘সব সময় বলে আসছি, রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচিতে আমাদের কোনো বাধা নেই। কিন্তু যখনই তারা জনগণের দুর্ভোগ করবে, জানমালের ক্ষতি করবে, আহত করবে, হত্যার চেষ্টা করবে, গাড়ি ভাঙচুর করবে—সেটি পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিহত করবে। তাদের ওপর যে অর্পিত দায়িত্ব, সেটা তারা পালন করবে।’

শনিবার (২৯ জুলাই) বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) ঢাকাকে সারা বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার একটা কর্মসূচি নিয়েছিল। কয়েকজন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাকে দেখেছি, তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে যানবাহন বন্ধ করেছেন। পুলিশ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছে। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ৩১ জন পুলিশ সদস্য এই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। আরও কয়েকজন আহত হয়ে অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কয়েকজন চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন।’

বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলায় পুলিশের একজন অতিরিক্ত ডিআইজি আহত হয়েছেন উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মেহেদীর (ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মেহেদী হাসান) ওপর বৃষ্টির মতো ঢিল ছুড়েছে। কিন্তু রিভেঞ্জ (বদলা) নেওয়া, গুলি ছোড়া, সেটি তিনি করেননি। নীরবে সহ্য করেছেন এবং তাদের পিছু হটতে বাধ্য করেছেন।’

বিএনপি ২০১৪-১৫ সালের মতো ‘অগ্নিসন্ত্রাস’ করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের ঘটনার পর থেকে সেই ২০১৪-১৫ সালের অগ্নিসন্ত্রাসের দিনগুলো স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। আবারও কি তারা সে ধরনের কর্মকাণ্ড করতে চাইছে কি না, আবারও ঢাকা অবরোধ করবে কি না। আবারও মানুষকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে মারবে কি না।’

বিএনপির একজন নেতার অগ্নিসংযোগ করার নির্দেশ দেওয়ার অডিও তাঁর হাতে এসেছে বলেও দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগেই নিপুণ রায়ের (ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক) ফেসবুকে একটি অডিও শুনলাম। তিনি বলছেন, “তোমরা আগুন ধরাও, এগুলো আমাদের জায়গামতো দেখাতে হবে।”

জায়গাটা কোনটি, তিনি নিজেই জানেন। দাউ দাউ করে আগুন জ্বালানোর হুকুম তিনি দিচ্ছেন। সব জায়গা থেকে বিএনপির নেতারা এ ধরনের কাজের জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন। আমরা এটার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি। সবাইকে আহ্বান করব, এ ধরনের জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়। এ ধরনের ঘটনা ঘটালে পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী, জনগণ কেউ এটা সহ্য করবে না।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তাঁর (নিপুণ রায়) শ্বশুরকে ডিবিতে এনে আপ্যায়ন করা হয়েছে। আরেকজন নেতাকে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী গিয়ে জুস খাইয়েছেন। তাহলে যাঁরা পুলিশের ওপর ‘হামলার নেতৃত্ব দিলেন’, তাঁদের কী আপনারা তোষামোদ করছেন? এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের এটি ভুল ধারণা। আমানউল্লাহ আমানকে যখন আটক করা হয়, তখন তিনি রাস্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। তাঁকে হৃদরোগ হাসপাতালে পুলিশ ভর্তি করেছে, চিকিৎসা দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী যখন শুনেছেন একজন বিএনপি নেতা পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন, আরেকজন সামান্য ধাক্কাধাক্কিতে আহত হয়েছেন; প্রধানমন্ত্রী শুনেই তাঁদের যথাযোগ্য চিকিৎসা বা যা যা প্রয়োজন, সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। এটাই মানবতার নেতার কাজ।’

প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ধাক্কাধাক্কিতে আহত যে বিএনপি নেতার কথা বলেছেন, তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি নিপুণ রায়ের শ্বশুর।

আরএস