ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন ও রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সাথে সাথে আজ (১১ অক্টোবর ২০২৩) বিকেল ৪ টায় এবি পার্টি নেতৃবৃন্দের এক সৌজন্য বৈঠক ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। গুলশানস্থ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঢাকা দপ্তরে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। এছাড়াও মতবিনিময়কালে এবি পার্টি নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, সহকারী সদস্য সচিব ও উইমেন উইং ইনচার্জ ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি। দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) সেবাস্তিয়ান রিগার-ব্রাউন মতবিনিময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনার শুরুতে এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ কিছুদিন পূর্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছয়জন নির্বাচন বিশেষজ্ঞের পর্যবেক্ষক দলের ঢাকা সফর ও তাদের সাথে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তারা বলেন, আসন্ন নির্বাচনে একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক মিশন মোতায়েন করার সম্ভাব্যতা, পরামর্শ এবং উপযোগিতা মূল্যায়ন করে ইইউ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা হতাশাজনক। কার্যকর রাজনৈতিক দল সত্বেও এবি পার্টিকে নিবন্ধন না দেয়া এবং নির্বাচন কমিশনের নানা বিতর্কিত কার্যক্রমে তাদের গ্রহণযোগ্যতার সংকট তৈরী হয়েছে বলে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন।
এবি পার্টির প্রতিনিধিদল বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কল্পনা করা যায়না। দুঃখজনকভাবে গণতান্ত্রিক রূপান্তর, আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার ক্ষেত্রে একটি জাতি হিসেবে বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক ব্যর্থতা রয়েছে। আলোচনা কালে রোহিঙ্গা ইস্যুতে নেতৃবৃন্দ বলেন, একটি বৈধ সরকার না থাকলে রোহিঙ্গা সঙ্কট শীঘ্রই সমাধান করা যাবে না। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বারবার আহ্বান জানানো সত্ত্বেও, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটিকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ করে সংস্কার করতে পারেনি যা অনিবার্যভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করে বলে নেতৃবৃন্দ মত প্রকাশ করেন। বর্তমান সরকারের অন্যায্য পীড়নমূলক সিদ্ধান্তে বেশ কিছু প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া দীর্ঘদিন ধরে অন্যায়ভাবে বন্ধ করে রাখার বিষয়টি নিয়ে নেতৃবৃন্দ তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
প্রতিনিধিদল ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ সমূহে বাংলাদেশ থেকে তৈরী পোষাক রপ্তানি হ্রাস সম্পর্কে তাদের দুশ্চিন্তার কথা তুলে ধরে বলেন আমাদের অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে ও প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে গার্মেন্টস এবং টেক্সটাইল ছাড়াও অন্যান্য পণ্য আমদানীর জন্য ইইউ কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে আমরা আশাবাদী। এবি পার্টি নেতারা শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে তাদের দলের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন। শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করা, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য দুরীকরণ, যৌন হয়রানি বন্ধ সহ ভাল কাজের পরিবেশের জন্য শিল্প ও ক্রেতাদের গাইড লাইন অনুসরণ করার বিষয়ে ইইউ’র সাথে কার্যকর মতৈক্যে পৌঁছার আভাস দেন।
এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ আরো বলেন জলবায়ু পরিবর্তণের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশ অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ এবং সব ধরনের দুর্যোগ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে এই অঞ্চল। একটি সবুজায়িত বিশ্বের জন্য এই সংগ্রামে সহায়তার জন্য এবং বাংলাদেশকে তার পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হতে সহায়তা করার জন্য দেশবাসী ইইউ’র প্রতি কৃতজ্ঞ।
রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি এবি পার্টির অধিকার ভিত্তিক নতুন প্রজন্মের রাজনীতির ধারণা ও কর্মসূচিগুলো মনোযোগ সহকারে শুনেছেন এবং প্রশংসা করেছেন।
আরএস