বিএনপি ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করছে । এদিন ভোট বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে হরতাল পালন করবে দলটি। পাশাপাশি ভোটাররা যাতে ভোটদানে বিরত থাকেন সেজন্য প্রচার-প্রচারণা, ভোটকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও সংঘর্ষ ঘটলে তার সচিত্র তথ্য সংগ্রহ করতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ভোটের এসব তথ্য-উপাত্ত বিদেশি দূতাবাসগুলোতে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির।
বিএনপি নেতাদের দাবি- সরকারের দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ নানা কারণে সরকারের ওপর মানুষের ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। কিন্তু সেটাকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে আন্দোলনে নামানো যায়নি। যার ফলে, আন্দোলনের কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসেনি। এখন শেষ প্রচেষ্টা হচ্ছে, ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি যাতে কম থাকে, সেটির জন্য শান্তিপূর্ণভাবে সারা দেশে প্রচার-প্রচারণা চালানো।
এছাড়া ভোটকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও তাদের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাত-সহিংসতা ও ভোট কারচুপির কোনো ঘটনা ঘটলে সেগুলোর ভিডিও ধারণ এবং তথ্য সংগ্রহ করতে দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে বিএনপিসহ বিরোধী দলবিহীন ভোটে মানুষের আগ্রহ ছিল না সেটি বিদেশিদের কাছে প্রমাণসহ তুলে ধরা যায়।
[271211]
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ভোটের দিনেও আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলমান থাকবে। নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে। এই নির্বাচন দেশের মানুষ ইতোমধ্যে বর্জন করেছে। ভোটাররা যে ভোট কেন্দ্রে যাবে না, এটা বুঝতে পেরে আওয়ামী লীগ বয়স্ক ভাতা কার্ড, বিশেষ ভাতা কার্ড দেওয়াসহ প্রশাসনকে দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে ভোট দিতে যাওয়ার জন্য।
তিনি আরও বলেন, ভোটের পরে আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চলমান থাকবে। জনগণ তাদের অধিকার আদায় করেই ঘরে ফিরবে।
নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির সম্পাদকমন্ডলীর একজন নেতা বলেন, এমনিতে বিদেশিরা জানেন যে এটা নির্বাচনের ‘বিশেষ সিলেকশন’ হচ্ছে। তারমধ্যে আমরা ভোটারদের ভোটদানে বিরত রাখতে পারি। ভোটের কাস্টিং যত কম হবে দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা ততই হারাবে। তাই ভোটের দিন আমাদের টার্গেট পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে ভোটারদের ভোটদানে বিরত রাখা।
তিনি আরও বলেন, তাছাড়া ভোটে নৌকার প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা আওয়ামী লীগের। আবার স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরাও আওয়ামী লীগের। ফলে উভয় পক্ষই ভোটে কাউকে ছাড় দিয়ে কথা বলবে না। আর এটা করতে গিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ-সহিংসতায় জড়াবে। এসব ঘটনার ভিডিও, ভোটের অনিয়মের চিত্র তুলে রাখতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা পরবর্তীতে বিদেশে দূতাবাসগুলোতে প্রমাণ হিসেবে পাঠানো হবে।
বিএনপির একটি সূত্র বলছে, দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে ভোটের বিপক্ষে অনাস্থা জানানো হবে। জনগণকেও ভোট বর্জনের আহ্বান করা হবে। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোটবিরোধী প্রচারণা ও ক্যাম্পেইন চলবে, যাতে মানুষ ভোটে নিরুৎসাহিত হয়। কোথাও ভোটের অনিয়ম ঘটলে সেগুলো দলের ফেসবুক, ইউটিউব চ্যানেল, টুইটারে তুলে ধরার জন্য একটা টিম কাজ করবে।
সূত্রটি জানায়, ভোটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করা হবে। তবে, এবার ২০১৪ সালের মতো ভুল করা হবে না। ভোটের পরেও টানা আন্দোলন চলমান থাকবে।
এইচআর