জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব সাবেক সংসদ সদস্য আহসান হাবিব লিংকন বলেন, আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছি। এ জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। চলতি বছরই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ বছর হবে।
পবিত্র রমজানের ২১তম দিনে সোমবার (১ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর বিজয় নগরস্থ বিজয়-৭১ চত্বরে এবি পার্টির গণইফতারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। দলটির মাসব্যাপী গণইফতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
আহসান হাবিব লিংকন বলেন, আমরা বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনে আছি। আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছি। এ জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। আপনারা দোয়া করবেন, এই বছরই যেন এই সরকারের শেষ বছর হয়। চলমান আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।
এবি পার্টির গণইফতারের কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রমজান মাসব্যাপী দেশের দুঃখী মানুষের জন্য গণইফতারের আয়োজন করেছে, আমি অভিভূত। যখন পত্রিকার পাতা খুললেই দুঃসংবাদ চোখে পড়ে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ, সিলেট এমসি কলেজে ধর্ষণ, মানুষের বাড়ি দখল, জনগণের সম্পদ লুট। এগুলো করছে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের গুন্ডাপান্ডারা। দেশের এই রকম দুঃসময়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি নতুন রাজনীতি শুরু করেছে। তাদের কাজের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠান বুয়েট নিয়ে আবার নতুন চক্রান্ত শুরু হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একবার আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অত্যাচারে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা অতিষ্ঠ- ঠিক সেই সময়ে সেই গুন্ডাপান্ডারা আবার বুয়েটের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলেছে। যে রাজনীতি আমাদের দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে হত্যা করে, আমাদের বোনদের স্বামীর সামনে ধর্ষণ করে- সেই রাজনীতি আমরা চাই না।
রাজনীতির নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমে সাধারণ ছাত্রদের নির্যাতন আর গুন্ডামি চলতে পারে না। ছাত্র রাজনীতির নামে আবরারের মতো আর কোনো মেধাবীর নৃশংস হত্যা দেশের জনগণ মেনে নেবে না। রমজান মাস অধিকার আদায়ের মাস, এবি পার্টি আপনাদের সঙ্গে নিয়ে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনবে ইনশাআল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, আমরা দেশের সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করছি। এই আপনারা যারা এখানে ইফতার করেন, তাদের জন্য রাজনীতি করছি। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের পরিশ্রম তখনই সার্থক হবে- যখন আপনারাও জেগে উঠবেন নিজের অধিকার বুঝে নিতে। আপনারা সবাই আমাদের হাতে হাত রেখে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিন, ইনশাআল্লাহ আমরা একটা সুন্দর, কল্যাণকর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম খোকনের সঞ্চালনায় গণইফতারপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন- এবি পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, বাম নেতা রফিকুল ইসলাম, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহজাহান ব্যাপারী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব আহমেদ বারকাজ নাসির প্রমুখ।
গণইফতারে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব মো. ফরিদ উদ্দিন, এবি যুবপার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার ফারুক, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ, শরণ চৌধুরী, রুনা হোসাইন, আমেনা বেগম, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, ছাত্রনেতা হাসিবুর রহমান খান, পল্টন থানার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, সদস্য সচিব রনি মোল্লা, যাত্রাবাড়ী থানা সমন্বায়ক সএমএইচ আরিফ প্রমুখ।
বিআরইউ