বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুধু নয়, দুর্ভিক্ষ চলমান। ৭২ থেকে ৭৫ যেভাবে বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশে পরিণত করা হয়েছিল শেখ হাসিনা দেশকে সে অবস্থায় নিয়ে যেতে চাচ্ছেন।
রিজভী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ নাকি কানাডা-ইউরোপের মতো উন্নত হয়েছে। এক মন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু আমরা গণমাধ্যমে কী দেখি? মা তার সন্তানকে বিক্রি করতে হাটে নিয়ে গেছেন। চারদিকে ভিক্ষার আওয়াজ, ভাত চাওয়ার আওয়াজ, চাল চাওয়ার আওয়াজ শোনা যায়। রাস্তায় এতো ভিক্ষুক আমরা কখনো দেখিনি। চারদিকে শুধু আমরা আহাজারি আর কান্না শুনতে পাই। আজকে যদি কেউ লঙ্গরখানা খুলে তাহলে সেখানে দেখা যাবে, গরিব মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে।”
মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে জিয়া প্রজন্ম দলের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের মানুষের অবস্থা ভয়াবহ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “আজকে দেশে ভয়াবহ ডলার সংকট চলছে। রিজার্ভ ফুরিয়ে আসছে। তিন মাস আমদানি করার রিজার্ভও ব্যাংকে নেই। তারা ১৯ বিলিয়ন ডলারের কথা বললেও ব্যাংকে রিজার্ভ আছে তার চেয়ে অনেক কম। বর্তমানে পোশাক রপ্তানি ৩০ ভাগ কমে গেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে পোশাক কারখানা থাকবে না, সব বন্ধ হয়ে যাবে। মানুষ বেকার হয়ে রিকশা চালানোর অবস্থাও থাকবে না। শেখ হাসিনা দেশকে সে অবস্থায় নিয়ে গেছেন।”
তিনি বলেন, “অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আক্রমণ করছে সরকার। তারা সবকিছুর অনুমতি দিলেও ইফতারের অনুমতি দেয় না। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইফতারেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। আর এটা করেছে তাদের প্রভুদের খুশি করতে। টার্গেট করে এদেশের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত করছে সরকার।”
বিএনপির মুখপাত্র আরও বলেন, “সারা দুনিয়া শেখ হাসিনার অবৈধ নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়নি। সেটা ২০১৪ হোক, ২০১৮ হোক বা ২০২৪ সালের নির্বাচন। কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী দেশ, যারা নিজেকে গণতান্ত্রিক দেশ বলে দাবি করে, তারা একটি দলের হয়ে সারা বিশ্বে ওকালতি করছে, অবৈধ নির্বাচনকে জায়েজ করতে চেষ্টা করছে। তারা বাংলাদেশের জনগণকে সম্মান করে না, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। তারা শুধু চায় বাংলাদেশে একটি দল আজীবন ক্ষমতায় থাকুক আর তাদের তাঁবেদারি করুক। সেজন্যই জনগণ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, তাদের পণ্য বর্জন করছে।”
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি নেতা ফিরোজ আলম, ছাত্রদল নেতা ডা. মুশফিক, আশরাফুল আসাদ প্রমুখ।
বিআরইউ