ঠাকুরগাঁওয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের জন্য দোয়া ও ঐক্য সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলাওয়ার হোসেন বলেছেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়েছে। তবুও রাজনৈতিক দলগুলো সফল হয়নি। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ছাত্র জনতার গণ-আন্দোলনে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার হাসিনার সরকার।

বলেন- বুকে গুলি ধারণ করে শহীদ হয়ে ছাত্র জনতা পুরো দেশবাসী ভয়ানক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করেছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কবল থেকে প্রিয় বাংলাদেশকে তারা দ্বিতীয় বার স্বাধীন করেছে। এই গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিলেন, যারা রক্ত দিলেন, আহত হয়েছেন আমরা তাদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।  আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করছি জাতির এসব বীর সন্তানদের তিনি যথাযথ সম্মানিত করবেন। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার হাসিনার পতনে বুকে গুলি ধারণ করে ছাত্র জনতা শহীদ হয়ে তার দেশকে মুক্ত করেছে। এই ছাত্র জনতা তাদের প্রিয় বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে অবশ্যই ভূমিকা পালন করবে। 

মুহা. দেলাওয়ার হোসেন বলেছেন, দোয়া করছি শহীদ প্রত্যেককে জান্নাতের বাগানের মেহমান হিসেবে তিনি কবুল করুন। যারা আহত হয়েছেন এবং পঙ্গু হয়ে গেছেন সবার জন্য প্রাণভরে দোয়া করি, মহান আল্লাহ আপনার সহায় হোন। আহতদের ধৈর্য ধারণ করার শক্তি কামনা করছি। ১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতা যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল এদেশের মানুষ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী তাদেরকে সাংবিধানিক নিয়মে খেতাব দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা। ২০২৪ সালের পহেলা জুলাই থেকে শুরু করে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দ্বিতীয় বার দেশকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও তাদের জুলুম নিপীড়ন থেকে মুক্ত করতে যারা শহীদ হয়েছেন, আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে নেমে এসেছিলেন তাদেরকে দ্বিতীয় প্রজন্মের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঠাকুরগাঁও উপজেলা শাখার আয়োজনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের রুহের মাগফিরাত এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনায় আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও ছাত্র-জনতার ঐক্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঠাকুরগাঁও উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা সোলাইমান হোসেন।

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল হাকিম।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধান, জেলা সেক্রেটারি মো. আলমগীর হোসেন, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক কফিল উদ্দিন, ছাত্রশিবিরের সাবেক কার্যকরী পরিষদ সদস্য মো. জাকির হোসেন, সদর সেক্রেটারি মাওলানা মিজানুর রহমান প্রমুখ।

মুহা. দেলাওয়ার হোসেন বলেন, আজকের দিনে আমরা স্মরণ করছি দেশের পূর্ব অঞ্চল ফেনী থেকে শুরু করে সিলেট পর্যন্ত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল মানুষকে। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত কোনো আগাম সংবাদ ছাড়াই তাদের তৈরি করা অবৈধ বাঁধ খুলে দিয়েছে। ফলে আকস্মিকভাবে সৃষ্ট বন্যায় দেশের লাখ লাখ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের সহযোগিতায় দেশবাসীকে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশের সীমান্তকে অরক্ষিত করার পাঁয়তারা করছে। আমরা হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে বলতে চাই, আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে এদেশ নিয়ে যারা খেলা করতে চাই তাদের সঠিক জবাব দেওয়া হবে। দেশের আঠারো কোটি জনগণ এবার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে অটুট রাখার স্বার্থে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে। বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা আওয়ামীদের তৈরি করা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতার শিক্ষা কারিকুলাম হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আমাদের সন্তানদের নৈতিক চরিত্র গঠনের সুন্দর শিক্ষানীতি অচিরেই দেশে প্রণয়ন হবে সে আশা আমরা করছি।    

তিনি আরও বলেন, আজকে জামায়াতের চরম শত্রুও একথা বলে যে, নৈতিকতা সম্পন্ন ভালো মানুষ হিসেবে জামায়াতের গ্রহণযোগ্যতা দেশে সবচেয়ে বেশি। আমরা যেহেতু সোনার মানুষ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতেও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আজ এদেশের জনগণ নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তনে সত্যিকার নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে দেখতে চায়। দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে যে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি, সেখানে দেশের অধিকাংশ মানুষ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বকে গ্রহণ করতে ব্যাকুল হয়ে আছে।

ইএইচ