রফিকুল ইসলাম খান

স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অটুট রাখতে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪, ০৩:০৮ পিএম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের কড়াল গ্রাসে আবদ্ধ ছিল। দেশে কোনো গণতন্ত্র ছিল না। মানুষের কথা বলার কোনো অধিকার ছিল না। ফ্যাসিবাদ তার অপশাসন দিয়ে জনগণের টুটি চেপে ধরেছিলো। গুম-খুনের মহোৎসব চলেছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছিল। বিচার ব্যবস্থাকে স্বৈরাচার সরকার পরিপূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়ে ছিল। এই অবস্থা থেকে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অসংখ্য রক্তের বিনিময়ে জাতি মুক্ত হয়েছে। আমরা গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আজকে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সামনে তাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করছি।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের হাজারীবাগ জোনের উদ্যোগে শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে আর্থিক অনুদান প্রদান ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক নুরুন্নবী মানিকের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শেখ শরিফ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাৃকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল-আমিন, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য শহিদুল ইসলাম সোহেল, মাহফুজ আলম, আখতারুল আলম সোহেল, মো. মজিবুর রহমান খান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।


রফিকুল ইসলাম খান বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার বুনিয়াদ যারা তৈরি করেছিলো সেই শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে আজ আমরা মিলিত হয়েছি। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের নির্দেশনায় আমরা আমাদের সামর্থ্যের আলোকে এই শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে উপহার পৌঁছে দিচ্ছি। তারা এই উপহার গ্রহণ করে আমাদের সম্মানিত করেছেন। তিনি বলেন, ছাত্র জনতার এই গণঅভ্যুত্থানকে জুডিশিয়াল ক্যু এর মাধ্যমে ধ্বংসের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। যেভাবে বিচারিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে। সেই একইভাবে তারা ছাত্র জনতার আন্দোলনকেও  প্রতিহত করার নীল নকশা করেছিল। কিন্তু ছাত্র-জনতার প্রতিরোধে তা ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের সবসময় সতর্ক ও প্রস্তুত থাকতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অটুট রাখার স্বার্থে দেশে যে গণহত্যা চালানো হয়েছে তার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে আমরা ৪৭-এ একবার স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তখনই মনে হয়েছিল আমাদের হয়ত আর স্বাধীনতা লাগবে না। কিন্তু পরক্ষণেই দেখা গেল আমাদেরকে শাসনের নামে শোষণ করা হচ্ছে। ৭১-এ আবার জীবন দিয়ে মানুষ তার প্রিয় স্বদেশকে মুক্ত করলো। তখন একটি স্বাধীনতা আমরা পেলাম। তখনও আমাদের মনে হয়েছিল আমরা হয়ত মুক্ত হয়েছি। আসলে তখন স্বাধীনতা ঠিকই পেয়েছিলাম কিন্তু একটি পরিবার সেই স্বাধীনতাকে তাদের নিজস্ব অর্জন মনে করে বাংলাদেশের মানুষকে গোলাম হিসেবে চিন্তা করে আমাদের জিম্মি করে ফেলেছিল। ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। এই সংগ্রামে যারা রক্ত দিয়ে জীবন দিয়ে এই দেশকে ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত করেছেন তারা জাতীয় বীর। আজকের আয়োজন থেকে সেই সব শহীদদেরকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ইএইচ