বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, তরুণ যুবকেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি চাঁদাবাজমুক্ত দেশ তারা গঠন করবে। বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে কলম খাতার পরিবর্তে দীর্ঘ ১৫ বছরে ফ্যাসিস্টদের অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস আর ছাত্র জনতা দেখতে চায় না। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে নিউমার্কেটের একজন ব্যবসায়ীকেও ৫ হাজার, ১০ হাজার, ১৫ হাজার বা ২০ হাজার টাকা চাঁদা না দিয়ে ব্যবসা করতে দেওয়া হতো না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মূলত কোনো দলের নাম নয়, আওয়ামী লীগ চাঁদাবাজদের দল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নিউমার্কেট থানা কর্তৃক আয়োজিত ‘সুধী সমাবেশ ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও নিউমার্কেট থানা আমির মাওলানা মো. মুহিব্বুল হক ফরিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. কামাল হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য ও জোন পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল আমিন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন থানা সেক্রেটারি গোলাম সরোয়ার, বিশিষ্ট সমাজসেবক একরামুল হক, বদরুল আলম, নিউমার্কেট থানা (পুলিশ) ওসি মহসিন উদ্দিনসহ স্থানীয় জামায়াত নেতৃবৃন্দ।
ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজনৈতিক মতাদর্শের পরিবর্তে অস্ত্র-গুলি দিয়ে দেশের মেধাবী ও দক্ষ অফিসারদের হত্যা করে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি সৃষ্টি করে প্রশাসনকে পঙ্গু করার চেষ্টা করেছিল। এরই প্রেক্ষিতে আমরা লক্ষ্য করেছি তরপর থেকেই গণতান্ত্রিক প্রশাসনকে আওয়ামী লীগের দলীয় ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে ৫ মে শাপলা চত্বরে আলেমদের হত্যা করে তারা ইসলাম বিদ্বেষী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল। তখন বাংলাদেশ বুঝতে পেরেছিল আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতার নাম দিয়ে বাংলাদেশকে ধর্মহীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান ও ৫ আগস্টের দিন সকাল ১১ টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ ও কতিপয় প্রশাসন নিউমার্কেট এলাকার রাস্তাগুলোতে আমাদের ভাইদের ওপর গুলি করে গণহত্যা চালিয়ে গণঅভ্যুত্থান ঠেকাতে চেয়েছিল; কিন্তু আল্লাহর রহমতে তা করতে পারেনি। এই আওয়ামী লীগ আলেমদের হত্যাকারীর দল। তারা এ দেশকে কারাগারে পরিণত করার দল।
ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, শহীদ আবু সাঈদ ও মীর মুগ্ধের মতো যেভাবে জুলাই ও আগস্টে বুক পেতে দিয়ে দোসরদের মোকাবিলা করেছেন; ঠিক সেভাবেই নতুন স্বাধীন দেশে লুকিয়ে থাকা আওয়ামী-ছাত্রলীগের কারণে হুমকির মধ্যে পড়লে আরেকবার জীবনবাজি রেখে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নিউমার্কেট থানা আমির মাওলানা মহিব্বুল হক ফরিদ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। আবার দেশে চট করে ঢুকে পড়ার কিছু অডিও ভাইরাল হতে দেখেছি। বাংলাদেশের মানুষ অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে আপনি ফিরে আসুন, নিজের তৈরি পাতা ফাঁদ ‘আয়না ঘর’ অপেক্ষা করছে। এ দেশের মানুষ আপনাকে আয়না ঘরে ঢুকিয়ে প্রতিশোধ নিবে।
তিনি আরও বলেন, নিউমার্কেট ব্যবসায়ী ভাইদের পাশে জামায়াতে ইসলামী ছিল আছে এবং থাকবে। পট পরিবর্তনের পরও জামায়াতের বিরুদ্ধে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়ে যায়নি। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল নীলনকশা ও ষড়যন্ত্র প্রতিহত করব। আগামী দিনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ইসলামী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশে গণমানুষের সরকার গঠন করার মাধ্যমে চাঁদাবাজি-দুর্নীতিকে চিরতরে কবরস্থ করব, ইনশাআল্লাহ।
ইএইচ