ইশরাক

বিএনপি ক্ষমতায় এলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করবে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৭:৫১ পিএম

বিএনপি ক্ষমতায় আসলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের দল থেকে নানা পরিকল্পনা এরই মধ্যে নেওয়া হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য কিছু যুগান্তকারী ব্যবস্থা নেবেন।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে ‘অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক সফল মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও স্মরণসভা’য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভার আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।

ইশরাক হোসেন বলেন, পুরো পৃথিবীতে যে ১০টি দূষিত নগরী আছে, তার মধ্যে ঢাকা অন্যতম। ঢাকার বায়ুর মান খুবই খারাপ। অল্প বৃষ্টি হলেও ঢাকায় চলার কোনো ব্যবস্থা থাকে না। ঢাকার খাল খননের নামে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা ওয়াসার কাছ থেকে জোর করে নিয়ে নেয় তাপস। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা তারা খরচ করে ফেলে।

তিনি বলেন, ঢাকাকে বিশ্বের উন্নত নগরগুলোর মতো বাসযোগ্য করে গড়ে তুলব। আমি আমার বাবার কাছ থেকে জানতে পেরেছিলাম ঢাকার উন্নয়নে সব থেকে বড় বাধা ছিল সমন্বয়হীনতা। এ সমন্বয়হীনতা দূর করার জন্য আমরা কাজ করব।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেব। এ বিষয়ে আমাদের দল থেকে নানা পরিকল্পনা করা আছে। দলের ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য কিছু যুগান্তকারী ব্যবস্থা নেবেন।

ইশরাক বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে সিটি করপোরেশনের যাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে, সেসব কিছুকে আমরা বিচারের আওতায় আনব। পাশাপাশি যারা বঞ্চিত হয়েছিল বা রোষের শিকার হয়েছিল তাদের যথাযথ মর্যাদায় আসীন করা হবে।

উদ্বোধনী বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, বহু গুণে গুণান্বিত ব্যক্তি ছিলেন সাদেক হোসেন খোকা। তিনি জনবান্ধব লোক ছিলেন, তার কাছে গিয়ে শত্রুও সহজে কথা বলতে পারতেন। তিনি জনতার মেয়র ছিলেন। যেটা অন্য মেয়রদের কারো মধ্যে ছিল না। তিনি দল-মত নির্বিশেষে সবার মেয়র ছিলেন।

তিনি বলেন, সাদেক হোসেন খোকা তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের প্রধানকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। সাদেক হোসেন খোকা হিন্দু সম্প্রদায়ের সমর্থন পেয়েছিলেন। তিনি একজন মুসলমান হলেও সব ধর্মের লোকদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল। তার কর্মের মধ্যদিয়ে তিনি মানুষের নেতা হয়েছিলেন। আমরা দেখেছি নির্বাচন হলে সাদেক হোসেন খোকাকে হারানো সম্ভব ছিল না। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সাদেক হোসেন খোকাকে হারানোর জন্য ঢাকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছিলেন।

তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ট্যাক্সের টাকা ঢাকা দক্ষিণের হক আছে। উত্তরের কারণে দক্ষিণের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আজকে ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থা খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। মানুষের কাছ থেকে ঠিকই কর নেওয়া হচ্ছে কিন্তু কোনো নাগরিক সুবিধা কেউ পাচ্ছেন না।

আব্দুস সালাম বলেন, আমরা আগে জাতীয় নির্বাচন চাই। তারপর সিটি করপোরেশন নির্বাচন চাই। যেখানে আমরা ইশরাককে মেয়র হিসেবে মনোনীত করব। আগামী নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে আমরা নির্বাচিত হতে চাই। ভোট ছাড়া আওয়ামী লীগের মত নির্বাচিত হতে চাই না। ভোট ছাড়া নির্বাচিত হওয়ায় আওয়ামী লীগের আজকে এ করুণ পরিণতি হয়েছে। যে কারণে এক কাপড়ে তাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পুলিশকে জনগণের বন্ধু না বানিয়ে শত্রু বানিয়েছিল। তাই হাসিনা পালানোর পরবর্তী সময়ে অনেক পুলিশেরই করুণ অবস্থা হয়েছিল। জনগণের বন্ধু না হয়ে কেউ কখনো টিকে থাকতে পারবে না। তাই জনগণের প্রভু হওয়ার কখনো চিন্তা করা যাবে না।

স্মরণ সভার সভাপতিত্ব করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর মাও. ইলিয়াস। সঞ্চালনা করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামান প্রিন্স। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কমিশনার কাজী আবুল বাশার।

আরএস