দীর্ঘ সাত বছরের অপেক্ষা শেষে দেখা হবে মা-ছেলের। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা হবে।
এদিকে লন্ডনে মায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন তারেক রহমান। দেখা হচ্ছে দীর্ঘ সাত বছর পর। মাঝখানে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে ও তারেক রহমানের ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কোকো। সেই বেদনাও রয়েছে তাদের দুজনের মধ্যে। ভাইয়ের মৃত্যুতে পাশে থাকা বা একমাত্র ভাইকে শেষ দেখাটাও দেখতে পারেননি তারেক রহমান।
এদিকে তারেক রহমানের সন্তানরাও বড় হয়ে গেছে। দীর্ঘ সময় পর সশরীরে দাদি খালেদা জিয়াকে দেখতে পাওয়া, সব মিলিয়ে যেন একটি আনন্দ ও আবেগঘন পরিবেশ। খালেদা জিয়া শুধু একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন একাধারে তিনি একজন মমতাময়ী মাও। তিনি যেমন বার বার পরিচয় দিয়েছেন দেশের প্রতি, জনগণের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসার। ঠিক তেমনি সন্তানের জন্যও ভালোবাসার কম পরীক্ষা দেননি। ধরতে গেলে প্রায় ১৫টি বছর ছেলের থেকে এক রকম দূরে থাকতে হয়েছে তাকে। কারণ দেশে ছেলে ফেরার নিরাপত্তা ছিল না, ছিল মৃত্যু ঝুঁকি। সঙ্গে জেল জুলুমতো আছেই। অবশেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। লন্ডনের হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরই সরাসরি একটি উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে তিনি ভর্তি হবেন বলে জানিয়েছে দলটি। এর মাধ্যমে
সাত বছর পর মায়ের সঙ্গে সশরীরে দেখা হবে ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের।
জানা গেছে, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স’ ফ্লাইটে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যান খালেদা জিয়া।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি থাকার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দেয়।
এরপর থেকে ছয় মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেত্রীর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার। এমন অবস্থায় গত ৫ আগস্ট গণ-আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া।
এরপর থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে বিএনপি।