মাগুরায় জামায়াত আমির

জামায়াত ক্ষমতায় এলে চাঁদাবাজি-দখলদারের অস্তিত্ব থাকবে না

মাগুরা প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৫, ০১:১২ পিএম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী দেশবাসীর সেবা করা সুযোগ পেলে এ দেশে চাঁদাবাজি ও দখলদারের অস্তিত্ব থাকবে না। ঘুষ থাকবে না। আমরা ফ্যাসিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের প্রশ্রয় দেবে না-চাঁদাবাজি করবো না করতেও দেবো না। এমন জাতি গড়তে চাই।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে মাগুরা জেলা শহরের নোমানী ময়দানে জেলা জামায়াতের বিশাল কর্মিভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডা.শফিকুর রহমান বলেন, চাঁদাবাজ ও দুঃশাসনমুক্ত,বৈষম্যহীন দেশ গড়তে জনগণ জামায়াতের দিকে তাকিয়ে আছে।ক্ষমতা নয়,সুশাসনের জন্য দেশবাসীর ভালোবাসা ও সমর্থন চাই। আমরা ন্যায় ও ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে চাই।

তিনি বলেন, বিগত সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ওয়াদা করেছিল ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াবেন তারা তাদের শাসনামলে সে কথা রাখেন নাই। আর আমরা এতদিনে বিভিন্ন জেলায় ও মাঠে একটি কর্মী সমাবেশের চিন্তা করি নাই। কেন করি নাই। কারণ এদেশে এমন একটি সরকার গায়ের জোরে দেশ চালাচ্ছিলো, যারা মানুষের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়েছিলেন। মানুষ কষ্ট পেলে চিৎকার করে কাদঁতে পারতো না। মানুষের ভালো লাগলে হাসতেও পারতো না। মানুষের মুখে অদেখা একটা তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছিল।

কেউ যখন সরকারের ভালো কাজে প্রশংসা করতো, সরকার কলোসিত হত, আবার কেউ যখন সরকারের মন্দ কাজের সমালোচনা করত তাকে আস্তে করে জেলখানায় পুরে রাখত। এরকম একটা ভয়ের সংস্কৃতি বিগত সরকার এদেশে কায়েম করেছিল। জনগণ সভ্য থাকলেও আমাদের শাসকরা সভ্য ছিলেন না। এজন্য তারা জনগণকে সম্মান করতে পারেননি। 

জনগণকে দেয়া কথা তারা রক্ষা করতে পারেননি। আজকে একজন আওয়ামী লীগের নেতা বলছেন চালের দাম এত কেন?তারা ২০০৯ সালে নির্বাচনের আগে কথা দিয়েছিলেন তাদেরকে ভোট দিলে দশ টাকা কেজি ধরে চাল খাওয়াবেন। তাদের ক্ষমতায় সাড়ে ১৫ বছরে তারা কি কখনো দেশের জনগণকে দশ টাকা কেজি দরে চাল দিতে পেরেছিল? পারে নাই। এভাবে জাতিকে দেয়া ওয়াদা তারা কোনোভাবে বাস্তবায়ন করেনি।

জামায়াত আমির বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে জামায়াত আমির বলেন,আমরা যাদের চোর, ডাকাত হিসেবে চিনি,তাদের সক্ষমতা কতটুকু? কিন্তু কলমের খোঁচায় যারা যারা হাজার হাজার কোটি টাকা ডাকাতি করেছে, তারা বড় চোর-ডাকাত। আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা ডাকাতি করে ব্যাংকগুলোকে ফোকলা করে দিয়েছে।অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতিকে সচল করার চেষ্টা করছে। আমরা চাই অর্থনীতি আরও গতিশীল হোক। বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার আরও উদ্যোগী হোক।

দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, একদল চাঁদাবাজি করে চলে গেছে। আরেক দল আসুক, আমরা চাই না। দেশে কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? হাতবদল হয়েছে। এ জন্য তো এত মানুষ শহীদ হননি। আমরা যেন শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি না করি। এসব ঘৃণিত কাজ করলে শহিদদের সঙ্গে বেইমানি হবে। আপনারা এই ঘৃণিত কাজ করবেন না। ফুটপাত, হাটঘাট, বালুমহাল, জলমহাল দখল, চাঁদাবাজিতে কোনো নেতাকর্মী পা দিবেন না।

দেশের সব মানুষের সমান অধিকার উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন,দেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বলে কিছু নেই।সবাই সাংবিধানিকভাবে সমান।ধর্ম-বর্ণ মিলেমিশে আমরা বসবাস করি।কেউ যদি আপনাদের সংখ্যালঘু বলে, চিৎকার করে বলবেন, আমরা রাষ্ট্রের নাগরিক,সবার অধিকার সমান।

মাগুরা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক এমবি বাকেরের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য দেন-জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন,মুহাদ্দিস আবদুল খালেক,মাওলানা আজিজুর রহমান,মাগুরা জেলা জামায়াতের সহ-সভাপতি মাহবুুর রহমান,সাধারণ সম্পাদক সাহিদ আহমেদ বাচ্চু প্রমুখ।

বিআরইউ