রাজধানীতে সুবিধাবঞ্চিত স্কুল শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষা উপকরণ তুলে দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলাওয়ার হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে আমরা দেশের সত্যিকার সুশিক্ষিত নাগরিক ও দেশের সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
বলেছেন, একটি শ্রেণি নগরীতে উচ্চ মানসম্মত শিক্ষায় এগিয়ে যাবে আর অন্যটি অসহায় দরিদ্র নিম্ন শিক্ষায় পিছিয়ে থাকবে এই বৈষম্য আমরা চাই না। শিক্ষার প্রতিটি স্তরে সকল ভেদাভেদ বৈষম্য দূর করে সুবিধা বঞ্চিত সবার সুশিক্ষা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারসহ সকল স্তরে দেশের সুবিধা বঞ্চিত প্রতিটি মানুষের সন্তানও পড়ালেখার সুযোগ পাবে সে স্বপ্ন আমরা দেখি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ডেমরা এলাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সমাজকল্যাণ বিভাগের উদ্যোগে রাজধানীর সুবিধা বঞ্চিত স্কুল শিক্ষার্থীদের মাঝে বই, খাতা, কলম, স্কুল ব্যাগ ও নানা শিক্ষা উপকরণ উপহার প্রদানে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও ডেমরা জোন সহকারী পরিচালক ও ডেমরা মধ্য থানার আমির মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এইচ এম শিবলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও সমাজকল্যাণ বিভাগের পরিচালক শাহীন আহমেদ খান। আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা ফরহাদ হোসেন, গিয়াস উদ্দিন, ডা. মোহাম্মদ মোশারফ, রহমত উল্লাহ, মো. নাসির উদ্দিন, মো. ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।
নতুন বই উৎসবে এ সময়ে সেখানে শতাধিক শিক্ষার্থীর হাতে বই, খাতা, কলম ও স্কুল ব্যাগ উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়।
মুহা. দেলাওয়ার হোসেন বলেন, দেশের সুবিধা বঞ্চিত প্রতিটি মানুষ যেন তার সন্তানকে নিয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে পারেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি মানুষের সে স্বপ্ন পূরণে সব সময়ে পাশে থাকবে। যে স্বপ্ন পূরণ হলে মূলত দেশ উপকৃত হবে, রাষ্ট্র আরও উন্নত হবে, পিতা-মাতা সম্মানিত হবেন। সর্বোপরি দেশের সম্মান বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে আজকের এসব সুবিধা বঞ্চিত মেধাবী শিশুরাই ভবিষ্যতে ভূমিকা রাখবে। সমাজের বিত্তবান মানুষ যারা আছেন, অন্তর্বর্তী এই সরকারের সময়েও রাষ্ট্রের দায়িত্বে যারা রয়েছেন সমাজের বঞ্চিত পিছিয়ে থাকা এসব শিশুদেরকে দেশের সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে আপনারা ভূমিকা পালন করুন।
তিনি বলেন, আমরা চাই এসব শিশু সন্তান বড় হয়ে যেন তার মা-বাবাকে সত্যিকার অর্থে সম্মান করতে শিখে, সেবা করতে শিখে, ভালোবাসতে পারে। সেই নৈতিক মানে গড়ে ওঠা চারিত্রিক শিক্ষার পরিবেশ আমরা জামায়াতের পক্ষ হতে প্রত্যাশা করি। বাবা-মায়ের কষ্ট যেন বড় হয়ে সন্তানেরা ভুলে না যায়। সঠিক শিক্ষার অভাবে বার্ধক্যের কালে যেন কোনো সন্তান তার বাবা মাকে দূরে ঠেলে না দেয়। আমরা দেখি শেষ বয়সে গিয়ে মা-বাবাকে অনেক কষ্টের মধ্যে থাকতে হয়, বৃদ্ধাশ্রম তথা মানবিক বিপর্যয়ের সে দৃশ্য আমরা আর দেখতে চাই না। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া সন্তানরা বড় হয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে তখন তিনি বাবা-মায়ের দায়িত্ব আর নেয় না। দুর্ভাগ্য তার এসব শিক্ষা অর্জন করে সে বড় হয়েছে ঠিকই কিন্তু তার নৈতিকতার শিক্ষার অভাবে বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্ব সম্মান দেখানোর জ্ঞান তার নেই। তাই চরিত্রের শিক্ষা, দ্বিনি শিক্ষা, মানবিক সম্মানের শিক্ষায় গড়ে ওঠে নিজ পরিবারের সম্মান ও উজ্জ্বল জাতি গড়ার স্বপ্ন আমরা দেখি। এজন্য আমরা অসংখ্য স্কুল পরিচালনা করছি মূলত শিশু মনে তার পিতা মাতার প্রতি সম্মান দেখাবার দায়িত্ববোধ জাগ্রত করতেই। আগামী দিনের পরিবার, রাষ্ট্র, সমাজ ও দেশের প্রকৃত সম্পদ হিসেবে আজকের শিশুদেরকে আমরা গড়ে তুলতে চাই।
ইএইচ