ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচার ছাড়া তাদেরকে যে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দিলে, জনগণ মেনে নিবে না উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের মৌলিক দায়িত্বের অন্যতম হচ্ছে রাষ্ট্র যন্ত্রের সংস্কার।
রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রশাসনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের আজ্ঞাবহ লোকদের প্রশাসন থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষদের নিয়োগ দিতে হবে। ডিসি, এসপি থেকে শুরু করে নির্বাচনের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টদের নিরপেক্ষ থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের দোসরদের সরিয়ে অন্য দলের মনোনীতদেরও নিয়োগ কিংবা দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। যারা ৫ আগস্টের পর থেকে ক্ষমতার মসনদে বসতে উঠেপড়ে লেগেছে তাদের লোক দিয়েও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেই নির্বাচন হবে ইতিহাসের জঘন্যতম প্রহসনের নির্বাচন। দেশের রাজনৈতিক দল এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্র যন্ত্রকে সংস্কার করে নিরপেক্ষ, সৎ ও আদর্শিক লোকদের দায়িত্ব দিতে হবে।
সোমবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি এক্স স্টুডেন্টস ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত ইফতার মাহফিল পূর্বক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজশাহী ইউনিভার্সিটি এক্স স্টুডেন্টস ফোরামের সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেনের পরিচালনায় ও সভাপতি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিল পূর্ব আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক দায়িত্বশীল যে যেখানে আছে সেখান থেকেই দেশের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে এবং আগামীতেও করবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভূমিকা জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে। এখান থেকে বের হয়েছে এবং হচ্ছে দেশ ও জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যোগ্য ও আদর্শবান নাগরিক।
ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইসলামী ছাত্র শিবির আজকে যেই পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে তা সম্ভব হয়েছে সাবেক দায়িত্বশীলদের আত্মত্যাগ আর দেশপ্রেম ও সততার কারণে। এই আত্মত্যাগ, দেশপ্রেম ও সততা অব্যাহত আছে এবং থাকবে। তিনি আরো বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার চেষ্টা করে যাচ্ছি আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা সফল হবো। সকল অপশক্তি ও অপপ্রচার এদেশের ছাত্র-সমাজই রুখে দিবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর আমীর ড. কেরামত আলী বলেন, দেশের সকল আন্দোলন সংগ্রামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্র শিবিরের ভূমিকা বরাবরই প্রশংসনীয়। ফ্যাসিবাদের শাসনামলে এই বিশ্ববিদ্যালয় ছিল তাদের অন্যতম টার্গেট। গত ১৬ বছরের সেই টার্গেট পূরণ করতে গিয়ে ইসলামী ছাত্র শিবিরের বহু নেতাকর্মীকে খুন, গুম ও হত্যা করা হয়েছে। হাজার-হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। জুলুমের শিকার হয়ে যেই শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে তিনি সাবেক ছাত্র নেতাদের সহযোগিতার আহ্বান জানান।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় বিদেশ বিষয়ক সম্পাদক মাইনুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র শিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলাম, রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানা আমীর অধ্যপক মোজাম্মেল হক, রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালী থানা আমীর অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সেক্রেটারি আশরাফ হোসেন ফারুক, ইসলামী ছাত্র শিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট ব্যাংকার এ.বি.এম আব্দুস সাত্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক আতাউর রহমান, সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দায়িত্বশীল এস.এম খায়রুজ্জামান সবুর, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক দায়িত্বশীল কামরুজ্জামান পুলক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক আবু হানিফ খন্দকার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি যথাক্রমে ড. মোবারক হোসাইন, আশরাফুল আলম ইমন, হাফেজ নুরুজ্জামান, হাবীবুর রহমান, আবুল কালাম আজাদ, আব্দুর রহিম, মোহাইমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন, রাজশাহী মহানগরী ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান বিশ্বাস, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী মাসুদ রানা, শেখ ফরিদ, তোফাজ্জল হোসেন তোফা, রবিউল ইসলাম, আফজাল হোসেন প্রমুখ।
বিআরইউ