জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, ১২ লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তারা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা সমাধান হিসেবে রোহিঙ্গাদেরকে নিজ ভূমিতে পুনরায় ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছি।
এ বিষয়ে আমরা নির্দিষ্টভাবে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত আরাকান রাজ্যকে পূর্ণ স্বাধীনতার মর্যাদা দিয়ে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছি। চীন এখনো সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের বেশ বড় সম্পর্ক রয়েছে। ফলে একটি আন্তর্জাতিক কমিটি থাকলে আমরা সকলে মিলে এখানে কাজ করতে পারব। এক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাবনা নিয়ে চীন সরকারের সঙ্গে তারা কথা বলবেন এবং উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
রোববার বাংলাদেশ সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের পেং জিউ বিনের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল সঙ্গে বৈঠক করেন ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের ছাড়াও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব যোবায়ের, প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
বৈঠক থেকে বের হয়ে ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে আমাদের খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। গত ডিসেম্বরে আমরা সফরে চীনে গিয়েছিলাম। সেটি ছিল সরকারি সফর। কিন্তু আজকের বৈঠকটি পার্টি টু পার্টি হয়েছে। চীন হচ্ছে এমার্জিং ফোর্স ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড এবং এই অঞ্চলের। এখানকার অর্থনীতি, রাজনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কে চায়নার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী ইনক্লুসিভ ইসলামিক লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। আমাদের মূলনীতি হলো সকলের সাথে সুসম্পর্ক করা, সেটি সরকার ও বেসরকারি পর্যায়ে। সেইজন্যই চীনের প্রতিনিধির সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছি আমরা।
চীন এখন বাংলাদেশের প্রধান বিনিয়োগকারী দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছি। কেন না, বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। তিস্তা প্রকল্প, দ্বিতীয় পদ্মাসেতু এবং গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি। যাতে ব্লু ইকোনমি আরও এগিয়ে যায়। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে কথা বলেছি। যাতে কেউ চোখ তুলে তাকাতে না পারে। বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে চীনে স্কলারশিপ দিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। তারা এসব বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। তবে তারা চীন সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে।
জামায়াতে নায়েবে আমির বলেন, আমরা আশা করি চীনের সঙ্গে সরকার টু সরকার, জামায়াতে ইসলামী টু সরকার, পিপলস টু পিপলস, পার্টি টু পার্টি রিলেশন আরও বৃদ্ধি পাবে। তারা তাদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীকে দল হিসেবে দাওয়াত দেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা জামায়াতের পক্ষ থেকে চীন কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশ সফরের আহ্বান জানিয়েছি। আমরা হোস্ট হবো। কেন না, অতীতে আমাদের সঙ্গে চীন এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির খুব বেশি ভালো সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু এটি এখন ব্যাপকভাবে ইন্টার্যাকশন হচ্ছে এবং দ্রুততার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে বলে মত দেন তিনি।
ইএইচ