জাতীয় নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের চাওয়া বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
দেশের পরিস্থিতি দেখে জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে এখনো ‘ভালো সমাধান’ মনে করছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের বিদায় চাচ্ছে না এবং নির্বাচন নিয়ে তাড়া দিচ্ছে না- ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এ বক্তব্যের সমালোচনা করে পাল্টা প্রশ্ন রেখে আমীর খসরু বলেন, ‘জনগণ ভোট চাইছে না, তা আপনি কীভাবে বুঝলেন?’
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, ‘কোনো মহামানব এসেও ভোট ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। বিএনপিসহ প্রায় ৫০টি রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি করেছে।’
সোমবার (২৮ এপ্রিল) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল-জাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল-জাজিরা’য় বাংলাদেশ পরিস্থিতি ও নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। গতকাল রোববার ‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট অ্যা নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ?’ শিরোনামে এ সাক্ষাৎকারটি আল-জাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
সেখানে ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখে এখনো মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা বলছে না, অন্তর্বর্তী সরকারকে বিদায় দাও। তারা এখনই ভোট চাইছে না। কেউ তা বলছে না। আমরা সেদিকেই যাচ্ছি। আমরা এমন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হইনি যেখানে জনগণ বলছে, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক।’
তার এ বক্তব্য প্রকাশের একদিন পরই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আপনাদের পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, কোনো মহামানব এসেও ভোট ছাড়া গণতন্ত্র দিতে পারবে না। ভোটের মাধ্যমেই জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে যে প্রতিশ্রুতি ও বক্তব্য দিয়েছেন, তার কোনো ব্যত্যয় হবে না।’
‘প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির সঙ্গে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বৈঠকের বক্তব্যকেই পুনরায় ঘোষণা দিয়েছেন। জুনের মধ্যে নির্বাচন প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি হয়েছে।’
আমীর খসরু আরও বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চাই। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার গঠন করতে রক্ত দিয়েছে। এই ত্যাগ কোনো মহামানবের প্রতিষ্ঠার জন্য নয়, কার্যকরী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য।’
এর আগে বিএনপির লিয়াঁজো কমিটির সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে ন্যাপ ভাসানী, আমজনতার দল ও পিপলস পার্টি।
আরএস