সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে আরও এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এ নিয়ে চলতি মৌসুমে হজযাত্রা শুরুর পর মোট ১৩ বাংলাদেশির মৃত্যু হলো।
বুধবার (৬ জুলাই) রাত ২টায় প্রকাশিত হজ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ যিনি মারা গেছেন তার নাম মো. আব্দুল মোত্তালিব (৫৮)। তিনি মারা গেছেন ৪ জুলাই জুন, মক্কায়। আব্দুল মোত্তালিব ওগাঁ জেলার বাসিন্দা ছিলেন। তার পাসপোর্ট নম্বর BT0686710।
এখন পর্যন্ত মারা যাওয়া ১৩ জন হজযাত্রীর মধ্যে পুরুষ ৯ জন, নারী ৪ জন। তাদের মধ্যে মক্কায় মারা গেছেন ১১ জন, মদিনায় ২ জন।
সৌদি পৌঁছেছেন ৬০,১৪৬ জন হজযাত্রী
পবিত্র হজ পালন করতে আজ বুধবার মিনার উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এর মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে।
মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মিনা। হজযাত্রীরের কেউ বাসে, কেউ বা হেঁটে বা অন্য যানবাহনে যাবেন মিনায়।
হজের অংশ হিসেবে তাঁরা পাঁচ দিন মিনা, আরাফাত, মুজদালিফা, মক্কা এবং আবার মিনায় অবস্থান করবেন। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা হয় স্থানীয় সময় ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রস্তুতি নিয়েও গত দুই বছর অনেকেই পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরব যেতে পারেননি। তবে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় এ বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১০ লাখ মুসল্লিকে হজ পালনের সুযোগ দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৬০ হাজার মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন।
হজযাত্রী প্রত্যেককে নিজ নিজ মোয়াল্লেম কার্যালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কখন মিনার উদ্দেশে রওনা দেওয়া হবে। একইভাবে মিনা, আরাফাত, মুজদালিফায় কিভাবে ও কখন রওনা হবেন, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয় আগেভাগে।
মিনার যেদিকে চোখ যায়, তাঁবু আর তাঁবু। চৌচালা ঘরের মতো এসব তাঁবুতে থাকবেন হজযাত্রীরা। এ সময় মিনায় আগুন জ্বালানো নিষেধ। কারণ, এতে তাঁবুতে আগুন লেগে যেতে পারে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এসব তাঁবুতে আছে বাতি, বাথরুম।
৮ জিলহজ মিনায় সারা দিন ও ৯ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন হজযাত্রীরা। আরাফাত থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় রাত যাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন তাঁরা। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরে আসবেন। মিনায় এসে বড় শয়তানকে পাথর মারা, দমে শোকর বা কোরবানি দেওয়া ও মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে মক্কায় ফিরে কাবা শরিফ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া সাঈ করবেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন।
হজ শেষে বাংলাদেশি হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ১৪ জুলাই। ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ৪ আগস্ট।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীর কোটা ছিল চার হাজার জন (রাষ্ট্রীয় খরচ ও গাইডসহ), অন্যদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কোটা ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট গত ৫ জুন শুরু হয়। সৌদি আরবে যাত্রার শেষ ফ্লাইট ৩ জুলাই। হজ শেষে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ১৪ জুলাই। ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ৪ আগস্ট।
ইএফ