কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিৎ

আমার সংবাদ ডেস্ক: প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম

আসছে ঈদ-উল-আযহা, আর বাকী দুই দিন। অনেকেই কুরবানির গশু কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে জানতে হবে কেমন পশু কোরবানির জন্য উপযুক্ত। সে ধরনের পশুগুলোকে চিনতে হবে। কোরবানির পশু হবে গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু যেমন—গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া কিংবা দুম্বা।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানির বিশেষ রীতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন তারা এসব গৃহপালিত পশুর ওপর আল্লাহর নাম নিতে পারে। যেগুলো আল্লাহতায়ালা রিজিকরূপে প্রদান করেছেন।’ (সুরা হজ: ৩৪)। কোরবানির পশু সুন্দর, সুস্থ ও নিখুঁত হওয়া চাই। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন কোরবানিকৃত পশু লোম, খুর ও শিংসহ উপস্থিত হবে।’ (ইবনে মাজাহ : ৩১২৬)। আর এ বিষয়টি নিয়ে বিশিষ্ট ইমাম ও খতিব,  মুফতি আবু সালেহের লেখায় সুস্পষ্টতা প্রকাশ পেয়েছে।

কোরবানি শুদ্ধ হওয়ার জন্য কোরবানির পশুর বয়স পূর্ণ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে উটের বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার বয়স কমপক্ষে এক বছর হতে হবে। তবে ভেড়া বা দুম্বা ছয় মাসের বেশি ও এক বছরের কিছু কম হয়, কিন্তু দেখতে এক বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারা কোরবানি করা যাবে। অবশ্য ছাগলের বয়স এক বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই কোরবানি জায়েজ হবে না। (কাজিখান : ৩/৩৪৮)

কোরবানির পশু যাবতীয় দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত হতে হবে। যে পশুর দুটি চোখই নষ্ট হয়ে গেছে বা এক চোখ পুরো নষ্ট, এমন পশু দ্বারা কোরবানি জায়েজ নয়। যে পশুর এক পা খোঁড়া, তা মাটিতে রাখতে পারে না, তা দ্বারা কোরবানি জায়েজ নয়।

হজরত বারা ইবনে আজেব (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো কোরবানির পশুর মধ্যে কোনগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তার চারটি অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করলেন এবং বললেন, চার প্রকার পশু থেকে—১. স্পষ্ট খোঁড়া প্রাণী; ২. একদম অন্ধ প্রাণী; ৩. খুব অসুস্থ প্রাণী এবং ৪. অত্যধিক দুর্বল প্রাণী, যা আর সুস্থ হবে না।’ (মুসনাদে আহমদ : ১৮৬৯৭)

যে পশুর দাঁত নেই, ঘাস বা খাদ্য চিবাতে পারে না এমন পশু দ্বারা কোরবানি জায়েজ নয়। (বাদায়েউস সানায়ে : ৪/২১৫)। যে পশুর শিং গোড়া থেকে ভেঙে গেছে সেটাও জায়েজ নয়। আর যে পশুর অর্ধেক শিং বা কিছু অংশ শিং ভেঙে গেছে অথবা শিং একেবারে ওঠেনি সে পশু কোরবানি করা জায়েজ। (বাদায়েউস সানায়ে : ৪/২১৬)

পশুর কান বা লেজ এক-তৃতীয়াংশের বেশি কাটা থাকলে কোরবানি হবে না। যদি জন্মগতভাবে কান ছোট হয় তবে সমস্যা নেই। হজরত আলি (রা.) হতে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন আমরা যেন ভালো করে পশুর চোখ ও কান পরীক্ষা করে নিই। আর আমরা যেন কানের পেছন থেকে কেটে ঝুলে থাকা এবং পশুর পেছনের কোনো অংশ কেটে ঝুলে থাকা পশু কোরবানি না করি।’ (ফাতাওয়া আলমগিরি : ৫/২৯৭)

অন্তঃসত্ত্বা পশু কোরবানি করা জায়েজ। জবেহর পর যদি বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায় তবে সেটাও জবেহ করতে হবে। কিন্তু বাচ্চা প্রসবের সময় আসন্ন হলে সে পশু কোরবানি করা মাকরুহ। (ফাতাওয়া শামি : ৫/২৮১)

বিআরইউ