এবার চাঁদেও পাওয়া যাবে ৪জি নেটওয়ার্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক : প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২৩, ১১:০৮ এএম

নোকিয়া এই বছরের শেষের দিকে চাঁদে ৪জি মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর জেরে চাঁদ সম্পর্কিত আবিষ্কারগুলি আরো উন্নত হবার পাশাপাশি উপগ্রহে মানুষের উপস্থিতির পথ প্রশস্ত করবে। ফিনিশ টেলিকমিউনিকেশন গ্রুপ আগামী মাসগুলিতে স্পেসএক্স রকেটের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক চালু করার পরিকল্পনা করছে।

নোকিয়ার প্রধান প্রকৌশলী লুইস মায়েস্ট্রো রুইজ ডি টেমিনো এই মাসের শুরুতে বার্সেলোনায় মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস ট্রেড শোতে সাংবাদিকদের একথা বলেন। নেটওয়ার্কটি একটি অ্যান্টেনা-সজ্জিত বেস স্টেশন দ্বারা চালিত হবে, এটি ডিজাইন করেছে ইউএস স্পেস ফার্ম ইনটুইটিভ মেশিন। নোভা-সি লুনার ল্যান্ডারে গোটা মেশিনটি সংরক্ষণ করা হবে। সেইসাথে থাকবে একটি সৌর-চালিত রোভার। ল্যান্ডার এবং রোভারের মধ্যে একটি এলটিই সংযোগ স্থাপন করা হবে। অবকাঠামোটি শ্যাকলটন ক্রেটারে অবতরণ করবে, যা চাঁদের দক্ষিণাংশ বরাবর অবস্থিত। নোকিয়া বলেছে মহাকাশের চরম পরিস্থিতি সহ্য করার মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এতে।

নেটওয়ার্কটি নাসার আর্টেমিস ওয়ান মিশনের অংশ। যার লক্ষ্য ১৯৭২ সালের পর মানব মহাকাশচারীদের চাঁদের পৃষ্ঠে পাঠানো। টেরিস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্কগুলি ভবিষ্যতের মহাকাশ মিশনের জন্য যোগাযোগের চাহিদা মেটাতে পারে। নোকিয়া বলেছে যে এর নেটওয়ার্ক নভোচারীদের একে অপরের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি এবং মিশন নিয়ন্ত্রণ করার ও সেইসাথে দূরবর্তীভাবে রোভারকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। সেইসঙ্গে রিয়েল টাইম ভিডিও এবং টেলিমেট্রি ডেটা পৃথিবীতে ফেরত পাঠাবে। মায়েস্ট্রো রুইজ ডি টেমিনোর মতে, ল্যান্ডারটি একটি স্পেসএক্স রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হবে।

তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন যে রকেটটি ল্যান্ডারটিকে চাঁদের পৃষ্ঠে সরাসরি নিয়ে যাবে না - যাত্রাটি সম্পূর্ণ করার জন্য এটিতে একটি প্রপালশন সিস্টেম রয়েছে। মুর ইনসাইটস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির প্রধান বিশ্লেষক আনশেল স্যাগ বলেছেন যে ২০২৩ সালের শুরু থেকেই নোকিয়া আশায় বুক বেঁধেছিলো নিজেদের মিশন নিয়ে।

স্যাগ ইমেলের মাধ্যমে CNBC কে বলেছেন- ‍‍`‍‍`যদি হার্ডওয়্যার প্রস্তুত থাকে তবে ২০২৩ সালেই গোটা মিশন শুরু করা যেতে পারে।‍‍`‍‍` নোকিয়া আগে বলেছিল যে তার চন্দ্র নেটওয়ার্ক "অত্যাবশ্যক কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ ফাংশন, চন্দ্র রোভারের রিমোট কন্ট্রোল, রিয়েল-টাইম নেভিগেশন এবং হাই ডেফিনিশন ভিডিওর স্ট্রিমিং সহ বিভিন্ন ডেটা ট্রান্সমিশন অ্যাপ্লিকেশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করবে।‍‍`‍‍`নোকিয়া তার চন্দ্র নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চাঁদে বরফ খোঁজার চেষ্টাও করছে। চাঁদের পৃষ্ঠের বেশিরভাগ অংশই এখন শুষ্ক, কিন্তু চাঁদে সাম্প্রতিক মানবহীন অভিযানগুলি থেকে জানা গেছে এর গর্তগুলিতে বরফের অবশিষ্টাংশ থাকতে পারে।

এই ধরনের পানিকে শোধন করা যেতে পারে এবং পানীয়ের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, রকেটের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করার জন্য হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনে বিভক্ত করা যেতে পারে বা মহাকাশচারীদের শ্বাস-প্রশ্বাসের অক্সিজেন সরবরাহ করার জন্য আলাদা করা যেতে পারে।

স্যাগ সিএনবিসিকে বলেছেন -‍‍` চাঁদে অন্বেষণ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ভবিষ্যতের অভিযানের জন্য এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। ভবিষ্যত কার্যক্রম শুরু করার আগে এটি একটি বড় পরীক্ষা বলে মনে হচ্ছে।‍‍`‍‍`
সূত্র : সিএনবিসি

আরএস